পঞ্চায়েতে একেবারে লড়াই হচ্ছে না তা নয়। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে অন্তত ১০টি জেলায় বিরোধীদের প্রার্থী রয়েছে। তার মধ্যে আটটিতে কমবেশি ৯০% আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। তবে যে সব জেলায় তৃণমূল নিরঙ্কুশ হয়েছে, প্রধানত সেখান থেকে তাদের প্রাপ্তি রাজ্যের মোট আসনের ৩৪% হলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আসনের জেলাভিত্তিক হিসেব শাসক দলের একাধিপত্য আরও বেশি করে প্রমাণ করে।
যেমন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদ জেতা বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও বাঁকুড়ার গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রাপ্তি যথাক্রমে ৮৭%, ৬৪% ও ৬৩%। পূর্ব বর্ধমানের গ্রাম পঞ্চায়েতে তারা দখল করেছে ৮৯% আসন।
পক্ষান্তরে আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়িতে জেলা পরিষদের সব আসনে বিরোধী প্রার্থী আছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতেও ৯০%-র মতো আসনে লড়াই হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের এই সব জেলায় কংগ্রেস ও বামেরা খাতায়কলমে বিরোধী হলেও তুলনায় বেশি প্রার্থী রয়েছে বিজেপিরই।
লড়াইয়ে রয়েছে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়াও। বিজেপি এই দুই জেলায় গ়ড়ে ৯০%-এর বেশি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বামেরাও জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদহ, পুরুলিয়ার অধিকাংশ জায়গা, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া ও দুই বর্ধমানে বেশ কিছু প্রার্থী দিয়েছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘যেখানে আমাদের শক্তি বেশি, সেখানে প্রতিরোধ করে ভাল সংখ্যায় মনোনয়ন দিয়েছি।’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের দাবি, ‘‘যেখানে তৃণমূল বিক্ষুব্ধদের নিয়ে ব্যস্ত, সেখানেই তুলনায় বেশি প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে।’’
কংগ্রেসের ‘দুর্গ’ মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদ-সহ রাজ্যে এক তৃতীয়াংশ আসনে বিনাযুদ্ধে তৃণমূলের জয় সম্পর্কে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া তুলনায় কম ধারালো। দিল্লিতে কংগ্রেস মুখপত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘ভোটে কেউ অংশ নিতে না পারলে তা গণতন্ত্রের উপর আঘাত। তবে অংশ নেওয়ার পারদর্শিতাও থাকা দরকার।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল চাইলে সব জেলায় বিরোধীদের ঠেকাতে পারত।’’