Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চায়েতে রেকর্ড শাসক দলের, বিনাযুদ্ধে ৩৪ শতাংশ আসন তৃণমূলের

রাজ্যে ১৯৭৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন ২৩,১৮৫ জন প্রার্থী। আর শুধু এ বারই ২০ হাজারের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা।

২০ হাজারের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা।

২০ হাজারের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:৩৭
Share: Save:

ভোটের আগেই ২০ হাজারের বেশি আসনে জয়ী তৃণমূল। পঞ্চায়েতের তিনটি স্তর মিলিয়ে প্রায় ৩৪% আসনে রয়েছেন শুধু শাসক দলের প্রার্থী। যা রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের ইতিহাসে রের্কড।

রাজ্যে ১৯৭৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন ২৩,১৮৫ জন প্রার্থী। আর শুধু এ বারই ২০ হাজারের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা।

এর আগে ২০০৩ সালে বাম জমানায় ৬,৮০০ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিলেন প্রার্থীরা। যার বেশির ভাগই ছিলেন বাম প্রার্থী। ২০১৩ সালে ৬,২৭৪টি আসনে ভোট হয়নি। তবে চলতি বছরের পঞ্চায়েত ভোট সে সব হিসেবকেশকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ— তিনটি স্তরে ৫৮,৬৯২ আসনের মধ্যে ২০,০৭৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা। দু-একটি ক্ষেত্র বাদ দিলে বাকি সব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আসনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরাই। তবে এর বাইরে এমন বহু আসন আছে, যেখানে তৃণমূলের পাশাপাশি নির্দল প্রাথীরা আছেন। যাঁদের ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল হিসেবেই চেনে স্থানীয় মহল।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার-পর্বের পরে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮,৬৫০ আসনের মধ্যে ১৬,৮১৪, পঞ্চায়েত সমিতির ৯,২১৭ আসনের মধ্যে ৩,০৫৯ এবং জেলা পরিষদে ৮২৫টি আসনের মধ্যে ২০৩টিতে জয় পেয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। কমিশনের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত আসা তথ্য চূড়ান্ত ধরা হলেও পরবর্তী কালে দু-একটি ক্ষেত্রে পরিবর্তনও হতে পারে।

লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এই নির্বাচনকে ‘ছেলেখেলা’ বলে মন্তব্য করেছেন। বিরোধীদের তরফে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ১০০% আসনে জিতবেন বলেছেন। আর নন্দী-ভৃঙ্গীরা গণতন্ত্রের শবদেহ রচনা করছে!’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, যেখানে ডিএম-এসপি’রা মনোনয়ন প্রত্যাহারের তালিকা তৈরি করেন, সেখানে এটাই ভবিতব্য! বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘কমিশন কত বড় অপদার্থ, তাতে তাদের হিসেব থেকেই স্পষ্ট। গ্রামে কেমন উন্নয়ন হয়েছে, সেটাও বোঝা যাচ্ছে মানুষের রায় নিতে তৃণমূলের ভয় পাওয়া দেখে!’’

বিরোধীদের এ সব অভিযোগে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না শাসক দল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হিসেব ৩৪% না ৪১%, জানি না! কিন্তু বিরোধীদের হাতে যে সামান্য কিছু লোকজন আছে, ভোটে গেলে সেটাও থাকবে না। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে। তাই বিরোধীরা ভোটকে ভয় পেয়ে নানা অভিযোগ করছে।’’

এই পরিস্থিতির মধ্যেই আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে একাধিক মামলা রয়েছে। পৃথক আবেদন না করে মূল মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে চায় বিজেপি। মামলার বিষয় নিয়েই রবিবার আইনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেন কমিশনের কর্তারা। আর সোমনাথবাবুর প্রশ্ন, ভিন্ রাজ্যের কাছে ভোটের জন্য পুলিশ না চেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলেই তো হত!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE