করুণ: ইকার মৃতদেহ। সাফারি পার্কে। —নিজস্ব চিত্র।
দিন তিনেক আগে পায়ে চোট লেগেছিল। তারপর থেকেই খুঁড়িয়ে হাঁটছিল ইকা। মঙ্গলবার সকালে বেঙ্গল সাফারি পার্কের নির্দিষ্ট ঘেরাটোপের মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় শাবকটিকে। ঘটনার জেরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পার্কের কর্মীদের মধ্যে। গত মে মাসে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শীলা পার্কে তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। এর মধ্যে ইকা ছিল সবচেয়ে ছোট।
সোমবার সন্ধ্যা অবধি ৭০০ গ্রাম মাংস এবং জল খেয়েছিল ইকা। সকালে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেই বনকর্মীরা এলাকায় যান। ততক্ষণে শাবকটি মারা গিয়েছিল। এর পরেই দফায় দফায় পশু চিকিৎসকেরা মৃত শাবকটিকে পরীক্ষা করেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে বনকর্তারা জানিয়েছেন, পায়ের আঘাতের ফলে স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব পড়েছিল। তা থেকেই ইকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল জু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি বিনোদ কুমার ঝা বলেন, ‘‘চোট স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাব বিস্তার করায় শাবকটি তা সহ্য করতে পারেনি বলে মনে হচ্ছে। বিস্তারিত রিপোর্টে আরও স্পষ্ট হবে। মা শীলা এবং বাকি দুই শাবক ভাল আছে।’’
এ দিন বিকেলেই পার্কে ইকার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য তার দেহের নমুনা কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ সাফারি পার্কের পিছনের অংশে ইকার দেগ দাহ করে দেওয়া হয়েছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, মা শীলার সামনেই নির্দিষ্ট খাঁচার মধ্যে তিনটি শাবক দিনরাত খেলাধুলা করে বেড়ে উঠছিল। মাস পাঁচেক বয়সী শাবকগুলোর শরীরের কোনও সমস্যা ছিল না। তিনদিন আগে ইকার পিছনের পায়ে চোট পায়। সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, খেলাধুলা করতে গিয়ে অথবা মা মুখে করে নিয়ে যাওয়ার সময় চোট লেগেছিল। তারপর থেকে সে খুঁড়িয়ে চলছিল। তাকে তিনজিন চিকিৎসক দেখছিলেন। ওষুধও দেওয়া হচ্ছিল। গত দু’দিন ধরে ইকার গতিবিধি কিছুটা কম ছিল। বন দফতরের অফিসারেরা জানান, বাঘেরা একবারে ২-৪টি সন্তান প্রসব করেন। ছোটটি সাধারণত রুগ্ন হয়। জন্মের পরে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। ইকার ক্ষেত্রেও সেরকমই ছিল। অন্য দু’টোর থেকে সে দুর্বল ছিল। সম্প্রতি দার্জিলিং চিড়িয়াখানার সাদা চিতাবাঘের দু’টি শাবক মারা গিয়েছে।
বেঙ্গল সাফারিতেই প্রথমবার ঘেরাটোপের স্বাভাবিক জঙ্গলের পরিবেশে কোনও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সন্তান প্রসব করে। শীলা ও স্নেহাশিসের তিনটি সন্তানই মেয়ে। মে মাসের পরে আলাদা করে শাবকগুলির দেখভাল শুরু হয়েছিল। পরিস্রুত পানীয় জল, সেদ্ধ মাংস ওষুধ দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy