লিয়োনেল মেসির যুবভারতী সফর ঘিরে যে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটল, তাতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। দক্ষিণ বিধাননগর থানায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শনিবারের বিশৃঙ্খলার ঘটনায় অন্তত ১০টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) আটটি ধারায় মামলা রুজু করেছে। এ ছাড়াও, এমপিও আইন এবং পিডিপিপি আইনে একটি করে ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বিএনএসের ১৯২, ৩২৪ (৪) (৫), ৩২৬ (৫), ১৩২, ১২১ (১), ১২১ (২), ৪৫ এবং ৪৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে। অর্থাৎ, হিংসায় উস্কানি দেওয়া, আঘাত করা, সম্পত্তির ক্ষতি, সরকারি কাজে বাধা, সরকারি কর্মীদের হেনস্থার মতো অভিযোগে মামলা রুজু বিধাননগর পুলিশের। পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা নিয়েও মামলা করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতায় নামেন মেসি। তাঁকে একঝলক দেখতে গভীর রাতেও কলকাতা বিমানবন্দরে ভিড় ছিল যথেষ্টই। বিমানবন্দর থেকে তিনি সোজা চলে যান বাইপাসের ধারের এক হোটেলে। শনিবার ঠিক সকাল ১১.৩০ মিনিটে যুবভারতীর মাঠে ঢোকে মেসির গাড়ি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ় এবং রদ্রিগো ডি’পল। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু মানুষ ঘিরে ধরেন তাঁকে। ফলে গ্যালারি থেকে মেসি, সুয়ারেজ় এবং রদ্রিগোকে দেখা যায়নি। সময় যত গড়াতে থাকে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করে যুবভারতীতে উপস্থিত দর্শকদের। ক্রমেই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় মাঠে। ভক্তদের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর পরে মেসিকে বার করে নিয়ে যাওয়ার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যুবভারতী। ফেন্সিং ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন কয়েকশো মানুষ।
আরও পড়ুন:
গ্যালারি থেকেই মাঠে উড়ে যায় জলের বোতল, চেয়ার। কয়েক জন ছিঁড়ে ফেলেন গোল পোস্টের জাল। ভেঙে ফেলেন সাজঘরে যাওয়ার টানেলের ছাউনি। উত্তেজনা ছড়ায় স্টেডিয়ামের বাইরেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মাঠে নামাতে হয় র্যাফ। শুধু স্টেডিয়ামে নয়, মাঠের বাইরেও বিশৃঙ্খলা ছড়ায়। অনেক ক্ষণ বাদে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
যুবভারতীর ঘটনায় নিজের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যুবভারতীর অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও মাঝপথ থেকেই ফিরে যান তিনি। তার পরেই মেসি এবং ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মমতা। একই সঙ্গে এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গড়েছেন তিনি। তদন্তে নেতৃত্বে দেবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। ইতিমধ্যেই ওই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।