গান্ধীর ছবির সামনে বিমল গুরুং। নিজস্ব চিত্র
দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর প্রতিনিধি রোশন গিরি জানিয়েছেন ‘সর্বোচ্চ স্বশাসনের’ কথা। মুখ্যমন্ত্রী সে বিষয়ে সবিস্তার জানতে চাইলে মোর্চা সূত্রে বলা হয়, ২ এপ্রিল কালিম্পংয়ে বৈঠক করে এর রূপরেখা তৈরি হবে। তার পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং জানিয়ে দিলেন, জিটিএ ভোট নয়, তাঁরা পাহাড়ে স্থায়ী সমাধানেরই দাবি জানাচ্ছেন। গান্ধীজির ছবিতে মালা দিয়ে তিনি আরও জানান, এ জন্য তিনি আমরণ অনশনও করতে তৈরি।
বুধবার দুপুরে দার্জিলিং শহর লাগোয়া মালিধূরা এলাকার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্কুল মাঠে নারী মোর্চার সভা হয়। সেখানে গুরুং, রোশন গিরিরা জিটিএ ভোটের বিপক্ষে কথা বলে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথাই বারবার বলেন। সেখানে গুরুং বলেছেন, ‘‘আমি পাহাড়ে ছিলাম না। আমার স্বভিমান বজায় ছিল। পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান হবে, মুখ্যমন্ত্রীর কথা ধরেই আমরা পাহাড়ে এসেছি। জিটিএ-র চেয়ারের লোভে নয়। বহুদিন আগেই তা ছেড়ে দিয়েছি। প্রয়োজনে আমরণ অনশন করব।’’ তিনি জানান, রাজ্য ও কেন্দ্রকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, যে বিজেপির সঙ্গ গুরুংরা সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেই বিজেপিরই সাংসদ রাজু বিস্তাকে তাঁরা ২ এপ্রিলের বৈঠকে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। একই সঙ্গে অবশ্য অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিধানসভা ভোট এবং দার্জিলিং পুরভোটে অংশ নিলেও জিটিএ ভোটে আর যেতে চাইছেন না গুরুংপন্থীরা। কেন? পাহাড়ের অনেক নেতার মতে, ‘‘দুই ভোটে হারের পরে নিজের হাতে তৈরি জিটিএ-তে পরাজয়ের মুখ দেখতে চাইছেন না গুরুং।’’ আর একটি অংশ মনে করে, ‘‘গুরুংয়ের দলের সংগঠন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, হামরো পার্টির চাপে তলানিতে। সেখান থেকে দলকে এই ভাবে উস্কে গুরুং নিজেকে প্রাসঙ্গিক করতে চাইছেন।’’ তবে ২০১৭ সালে টানা বন্ধ ডাকা গুরুং এ বারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথাই বলেছেন। সামনেও রেখেছেন গান্ধীজির ছবি।
গত সোমবার রিচমন্ড হিলে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন দলের প্রতিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি প্রথমে জিটিএ ভোট তার পরে বাকি তিনটে পুরসভা এবং পঞ্চায়েতে ভোটের কথা বলেন। সেখানে রোশনের সঙ্গে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু পরের দিন ম্যাল চৌরাস্তার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও রোশন যাননি। তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল, মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে থাকাকালীন চাপ বাড়ানোর রাস্তায় হাঁটতে পারেন গুরুংরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy