বাংলাদেশি সন্দেহে দিল্লি পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। বীরভূমের পাইকরের সেই পরিবার এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাহায্যের আর্জি জানাল। ভিডিয়ো বার্তায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের অনুরোধ, ‘‘আমাদের ফিরিয়ে আনুন।’’ পাশাপাশি, দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মারধর, চক্রান্ত করে বাংলাদেশি বানানোর অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা।
রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম আনন্দবাজার ডট কম-কে বলেছেন, ‘‘বীরভূমের এই পরিবারকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। কলকাতা হাই কোর্টেও এ নিয়ে মামলা করা হয়েছে।’’
রুজির টানে দিল্লিতে গিয়েছিলেন বীরভূমের মুরারই-২ ব্লকের পাইকর এলাকার বাসিন্দা দানিশ শেখ। অভিযোগ, গত ১৮ জুন বাংলাদেশি সন্দেহে দানিশ, তাঁর স্ত্রী ও বছর সাতেকের পুত্রসন্তানকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। নথি দেখালেও কাজ হয়নি। পরে সামিরুলই দাবি করেছিলেন যে, দানিশ ও তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বার ভিডিয়ো বার্তায় দানিশের স্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা দিল্লিতে কাজ করতে গিয়েছিলাম। ওখানে আমাদের ধরেছিল পুলিশ। আমরা আধার কার্ড দেখালাম। বললাম যে, আমরা বাংলাদেশি নই। কিন্তু আমাদেরকে দিয়ে কী সব লিখিয়ে নিল! তার পর বলল, তোরা বাংলাদেশি না হলেও, তোদের বাংলাদেশি বানিয়ে দেব। পুলিশগুলোই এ সব বলছিল।’’
মহিলার অভিযোগ, তাঁদের দিল্লির রোহিণী থানায় আটক করে রাখা হয়েছিল। সেখানে ভীষণ মারধর করা হয়েছিল তাঁদের। তার পর গাড়িতে করে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল মোবাইলও। মহিলার কথায়, ‘‘গাড়িতে তোলার সময়েও ভীষণ মারধর করা হয়েছে আমাদের। ছবি তুলেছে। আঙুলের ছাপ নিয়েছে। হাসপাতালেও নিয়ে গিয়েছিল মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে। তার পর আমাদের এখানে (বাংলাদেশে) পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছি। চেয়েচিন্তে বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছি। এক কাপড়ে রয়েছি।’’
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে মহিলা বলেন, ‘‘আমাদের সাহায্য করুন মমতাদি। আমরা খেতে পাই না। আমাদের উদ্ধার করুন।’’