বিজেপি-র শহিদ বেদির উপরেই এখন তৃণমূলের দলীয় পতাকা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য রাজনীতিতে যে অখ্যাত গ্রামকে কেন্দ্র করে থেকে উত্থান গেরুয়া শিবিরের, সে গ্রামই এখন কার্যত বিজেপি-শূন্য। অনুব্রত মণ্ডলের খাস তালুক বলে পরিচিত বীরভূম জেলার অখ্যাত এক গ্রাম মাখরা দখলের লড়াই ঘিরে একসময় বহু রক্ত ঝরেছে। বোমাবাজি, রাজনৈতিক সংঘর্ষ— এক সময় এ সব কিছুরই সাক্ষী থেকেছে জেলার পাড়ুই থানা এলাকার মাখরা গ্রাম। তবে সে সব এখন অতীত। বিজেপি কর্মীর শহিদ বেদিতে জায়গা করে নিয়েছে শাসক দল তৃণমূলের পতাকা।
২০১৪ সালে রাজ্য জুড়ে সর্বত্রই তৃণমূলের দাপট। আর পাঁচটা জায়গার মতো বীরভূমও কার্যত বিরোধী-শূন্য। তবে সে সময় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতের টক্করে উঠে আসে তৎকালীন জেলা বিজেপি সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের নাম। অনুব্রতকে তাঁর গড়েই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন দুধকুমার। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, দুধকুমারের হাত ধরেই বীরভূম তথা রাজ্যে বিজেপি-র পথচলা শুরু হয়। এবং তার কেন্দ্রে ছিল মাখরা গ্রাম।
মাখরা গ্রামকে কেন্দ্র করে গেরুয়া শিবিরের উত্থান পর্বে রাজনৈতিক সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে পাড়ুই। ২০১৪-র অক্টোবরে মাখরা গ্রাম দখলের লড়াইয়ে অনুব্রত এবং দুধকুমারের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষে বহু প্রাণ হারিয়েছে দু’দলই। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দু’দলের সংঘর্ষে অহরহ বোমাবাজি এবং গুলির লড়াই চললেও নির্বাক দর্শকের ভূমিকায় থিল পুলিশ-প্রশাসন। তবে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠলেও শাসক দলকে কার্যত কোণঠাসা করেছিলেন দুধকুমার।
আরও পড়ুন: ৪ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, কী বার্তা নেত্রীর, অপেক্ষায় নেতা-কর্মীরা
আরও পড়ুন: বিজেপি যখন অফিস ভাঙছিল, কোথায় ছিলেন ববি: জিতেন্দ্র
পুলিশের সামনে এতগুলো খুন ও বোমাবাজির ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াকে। ঘটনার পর পরই এলাকায় জারি হয় ১৪৪ ধারা। সে সময় মাখরা গ্রামে বিজেপি সমর্থকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মাখরায় তিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পাঠান বিজেপি নেতৃত্ব। মাখরার উদ্দেশে রওনা দেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুখতার আব্বাস নকভি, সাংসদ কীর্তি আজাদ এবং উদিত রাজ। ওই সফরে ছিলেন দলের তৎকালীন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও। কিন্তু গ্রামে ঢোকার মুখে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে তাঁদের। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়। সে সময় বিজেপি নেতাদের দাবি ছিল, শাসক দলের হয়ে কাজ করছে পুলিশ।
গ্রামদখলের লড়াইয়ে নিহত হন বিজেপি সমর্থক শেখ তৌসিফ। তাঁর নামে তৈরি হয়েছিল শহিদ বেদি। তবে বিজেপি-র শহিদ বেদির উপরেই এখন তৃণমূলের দলীয় পতাকা। গ্রামবাসীদের দাবি, “তখন পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy