Advertisement
E-Paper

স্কুলে স্কুলে কবি-স্মরণেও বাধা সেই বেনজির ছুটি

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ বার আর রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিনে রবীন্দ্র চর্চা করতে পারল না পড়ুয়ারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০২:২২
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

গান, আবৃত্তি-সহ নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া চলছিল পুরোদমে। রবীন্দ্রনাথের কোন নাটক এ বার মঞ্চস্থ করা হবে সেটাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ দু’মাসের ছুটি পড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার পঁচিশে বৈশাখে রাজ্যের বেশির ভাগ সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালিত হল না। ওই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, গরমের ছুটির পরে স্কুল খুললে কবিপ্রণামের বন্দোবস্ত হবে। ব্যতিক্রম উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার স্কুল। তারা কবিকে স্মরণ করেছে তাঁর জন্মদিনেই।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ বার আর রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিনে রবীন্দ্র চর্চা করতে পারল না পড়ুয়ারা। তবে স্কুল খুললে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী একসঙ্গে পালন করা হবে।’’ হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল দাস জানান, পঁচিশে বৈশাখ রবিবারে পড়লে তার এক দিন আগে বা পরে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা হয়। এ বার গুরুবারে জন্মদিন পড়া সত্ত্বেও কবিগুরুকে প্রণাম জানাতে পারল না পড়ুয়ারা। ছুটির পরে অনুষ্ঠান করা যায় কি না, চিন্তাভাবনা চলছে। দমদমের সুভাষনগর হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম, বারুইপুরের রামনগর স্কুলের শিক্ষক সৌম্য মাইতিও জানান, স্কুল খুললে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা হতে পারে।

তবে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূতনাথ আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষক নব্যেন্দু ঘড়ার প্রশ্ন, ‘‘দু’মাস পরে স্কুল খুললে পড়াশোনার চাপ থাকবে খুব। পরীক্ষা সামনে চলে আসবে। তখন আর ছাত্রছাত্রীদের রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করার মানসিকতা থাকবে তো?’’ রবীন্দ্রজয়ন্তী যে-কোনও সময়ে আদৌ পালন করা যায় কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। জুলাইয়ে বর্ষার মধ্যে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন একটু বেমানান বলে মনে করছেন তাঁদের অনেকেই।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জন্মদিনে কবি-স্মরণের ব্যবস্থা হয়নি মুর্শিদাবাদের বেশির ভাগ স্কুলে। বহরমপুরে চোঁয়াপুর বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী সেন ও মহাকালী পাঠশালার প্রধান শিক্ষিকা নন্দিনী দাশগুপ্ত জানান, ছুটি পড়ে যাওয়ায় স্কুলে এ বার আর রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা গেল না।

রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করতে না-পারাটা ছাত্রছাত্রীদের বিরাট ক্ষতি বলে মনে করছে শিক্ষক সমিতিগুলিও। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুগত বসু বলেন, ‘‘পঁচিশে বৈশাখের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথকে জানে, চেনে। রবীন্দ্রনাথের ভাবধারার সঙ্গে পরিচিত হতে পারে আজকের প্রজন্ম। এ বার সেই অনুষ্ঠান না-হওয়ায় ক্ষতি তো হল পড়ুয়াদেরই।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক সময় বন্‌ধের দিন তো স্কুলে আসা বাধ্যতামূলক করে দেয় সরকার। গরমের ছুটি পড়ে গেলেও সরকার রবীন্দ্রজয়ন্তীতে ছাত্র ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করতে পারত।’’

ব্যতিক্রমও আছে। মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহারের বেশ কয়েকটি স্কুলে এ দিন রবীন্দ্রজয়ন্তী পালিত হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুল-সহ বেশ কয়েকটি উচ্চ মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুল কবির জন্মদিনেই তাঁকে স্মরণ করেছে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুল, রায়গঞ্জ গার্লস স্কুল-সহ কয়েকটি স্কুলেও কবিপ্রণামের আয়োজন হয়েছিল। গানে-কবিতায় রবীন্দ্রচর্চা হয়েছে মালদহ ইংরেজবাজারের শোভানগর হাইস্কুল এবং কোচবিহারের তুফানগঞ্জের নাটাবাড়ি হাইস্কুলে।

ওই সব স্কুলের শিক্ষকেরা জানান, উত্তরবঙ্গে তেমন গরম পড়েনি। স্কুল খোলার দাবিতে বিক্ষোভও চলছে। কয়েকটি স্কুলে তো গরমের ছুটির মধ্যেও বেসরকারি ভাবে কিছু সময়ের জন্য ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

Rabindranath Tagore Summer Vacation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy