বিধানসভায় পঞ্চায়েত ভোটে ঘরছাড়াদের সঙ্গে বিজেপির মহিলা বিধায়করা। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের সন্ত্রাসের শিকার মহিলাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেল বিজেপি পরিষদীয় দল। বুধবার বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন পাঁচ জন ঘরছাড়া বিজেপি মহিলা প্রার্থী এবং কর্মী। সেখানেই তাঁরা বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্যদের জানান, তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। আমতা-২ ব্লকে বিজেপির হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ২ প্রার্থী জানান তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কান্নায় ভেঙে পড়তেও দেখা যায়। এই পাঁচ জনের দলে ছিলেন পাঁচলায় আক্রান্ত মহিলাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর কথায়, পঞ্চায়েত ভোটের দিন শাসকদলের ছাপ্পা আটকাতে গিয়ে তাঁকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি এবং তাঁর পরিবার বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। ঘটনাচক্রে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দিল্লিতে থাকায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি আক্রান্তদের। বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, ওই পাঁচ জন বিজেপির মহিলা কর্মীকে নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যথা সময় তাঁদের আইনি প্রয়োজনে আদালতে পেশ করা হবে।
বুধবার বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গের নারী নির্যাতনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চেয়ে প্রস্তাব আনেন বিজেপির আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। কিন্তু বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সেই প্রস্তাব আনার অনুমতি দেননি। তাই বিধানসভার অন্দরে বিক্ষোভ দেখিয়ে ওয়াকআউট করেন বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্যেরা। পরে অধিবেশন কক্ষের বাইরে বেরিয়ে রাজ্য সরকার এবং স্পিকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিজেপি বিধায়কেরা। অগ্নিমিত্রা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মহিলাদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে তা নিয়ে আমাদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। বিধানসভার অন্দরে আমাদের আলোচনা করতে দেওয়া হল না। আমরা ধিক্কার জানাই মুখ্যমন্ত্রীকে, যিনি এক জন মহিলা হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মহিলাদের সুরক্ষা দিতে পারছেন না।” আগামী সোমবার বিধানসভায় অশান্ত মণিপুরে নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনা হচ্ছে।
সেই প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রার বক্তব্য, “মণিপুর নিয়ে প্রস্তাব আনা হলে স্বাগত। কিন্তু সাতগাছিয়াতে এক জন ৬৫ বছরের মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। আজকে রায়নাতে এক জন মহিলাকে অ্যাসিড মারা হয়েছে। কোচবিহারে এক জন স্কুলছাত্রীকে দু’দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে। একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে সেগুলো নিয়েও যেন বিধানসভায় আলোচনা হয়। সরকার পক্ষ যেন এই দাবির কথা মাথায় রাখেন।” তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলি বলেন, “বিজেপি মণিপুর নিয়ে দেশের মানুষকে জবাব দিতে পারছে না বলেই এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে আমাদের বিরুদ্ধে। আসলে লোকসভা ভোটে ওদের হার নিশ্চিত জেনেই এমন সব অভিযোগ সাজিয়ে নিজেদের মুখ বাঁচাতে চাইছে।” অন্য দিকে, ভাঙড়ে শান্তি ফেরাতে বিধানসভায় আলোচনা চেয়ে স্পিকারের দফতরে প্রস্তাব জমা দিয়েছেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy