দিনকয়েক আগে ঘোকসাডাঙায় বিজেপি বিধায়কের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পর ৬৫ জন বিধায়ক নিয়ে এসে সভা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কোচবিহার জেলা তৃণমূল। সেই ঘোষণার পরেই বিরোধী দলনেতা তথা দলীয় বিধায়কদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বিশেষ বন্দোবস্ত করতে শুরু করেছেন কোচবিহার জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তবে বিজেপি বিধায়কদের নিরাপত্তায় তাঁরা কী পদক্ষেপ করতে চলেছেন, সে বিষয়ে এখনই খোলসা করতে নারাজ তাঁরা। কারণ, তাঁদের নিরাপত্তার কৌশল তৃণমূল নেতৃত্ব বা রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা জেনে গেলে, কর্মসূচি নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। বিরোধী দলনেতা ৫ অগস্ট, মঙ্গলবার কোচবিহারে এসে তাঁর বিধানসভার সতীর্থদের নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করবেন।
এর পাল্টা ওই দিনই জেলার ১৯টি জায়গায় এনআরসি-বিরোধী অবস্থান আন্দোলন করবে তৃণমূল। শনিবার জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে ওই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক।
কোচবিহারের বাবুরহাট, ঘুঘুমারি, মাথাভাঙা, সিতাই, চ্যাংরাবান্ধা, তুফানগঞ্জ, ভেটাগুড়ি-সহ বহু জায়গায় সভা চলবে। দুপুর ২টো পর্যন্ত এই সভাগুলি হবে। ফলে কোচবিহারে ঢোকার সমস্ত এন্ট্রি পয়েন্টে তৃণমূলের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক জমায়েত করবেন বলে তৃণমূলের দাবি।
তৃণমূলের এই কর্মসূচির ফলে যাতে বিরোধী দলনেতার কর্মসূচি কোনও ভাবেই প্রভাবিত না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছেন কোচবিহার বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি ৬৫ জন বিধায়ক যাতে কোনও ভাবেই আক্রান্ত না হন, সেই বিষয়টিও তাঁদের মাথায় রয়েছে। যদিও রাজ্য বিজেপির এক নেতা জানাচ্ছেন, বিরোধী দলনেতা-সহ বিধানসভার বিজেপি বিধায়কেরা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান। ওই দিন কর্মসূচির সময় সেই নিরাপত্তারক্ষীরা উপস্থিত থাকবেন। তাই নিরাপত্তা নিয়ে তাঁরা বিশেষ চিন্তিত নন। তবে বিজেপির কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টা হলে যে পাল্টা কর্মসূচি দিয়েই কোচবিহার উত্তপ্ত করে দেওয়া হবে, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে রাজ্য বিজেপির তরফে।
ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের দিনই শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা অভিযান করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। ওই দিন ধর্মতলার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এ বার থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কোনও কর্মসূচি হলে পাল্টা কর্মসূচি করবে তাঁর দল। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণাকে হাতিয়ার করেই কোচবিহার জেলা তৃণমূল শুভেন্দুর কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি সাজিয়েছে। ইতিমধ্যে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের সাক্ষাতের পাল্টা যে কর্মসূচি শাসকদলের জেলা সংগঠন নিয়েছে, সেই বিষয়টি জানানো হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও। এ ক্ষেত্রে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে যাতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন পাওয়া যায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছেন কোচবিহার জেলার বিজেপি নেতৃত্ব।