Advertisement
E-Paper

‘বিজেপির ঝড়ে লন্ডভন্ড’! টর্নেডো তাণ্ডবে রাজনীতি মেশানো দিলীপ-মন্তব্যে নিন্দার ঝড়, অস্বস্তি পদ্মে

জলপাইগুড়িতে টর্নেডোর তাণ্ডব নিয়ে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও উদ্বিগ্ন। লোকসভা ভোটের আবহে ঝড়ের তাণ্ডব হলেও এখনও পর্যন্ত রাজনীতির ছায়া পড়েনি। দিলীপ সেটাই করে ফেললেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৩৯
BJP leader Dilip Ghosh makes new controversy by his comment on cyclone in Jalpaiguri

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

ক্ষণিকের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা। রবিবার রাতে ঝড় থামার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে বিশেষ বিমানে রওনা হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালেই কলকাতা থেকে রওনা দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জলপাইগুড়িতে মমতা থাকার সময়েই ফোন পান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। উদ্বেগ প্রকাশ করেন শাহ। তার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্ধার এবং সেবাকাজে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আবহে এত কিছু হলেও টর্নেডোর তাণ্ডব নিয়ে কোনও রাজনীতি প্রকাশ পায়নি। কিন্তু হালকা চালে কথা বলতে গিয়ে বিতর্ক তৈরি করে ফেললেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।

বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের প্রার্থী দিলীপ সোমবার সকালে সংবাদমাধ্যমের সামনে টর্নেডো বিপর্যয়কে রাজনীতির মোড়ক দিয়ে দেন। দাবি করেন, উত্তরবঙ্গে বিজেপির ঝড়েই সব লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ঝড় তো উত্তরবঙ্গে শুরু হচ্ছে। ভোট ওই দিক থেকেই শুরু হচ্ছে। বিজেপির ঝড় শুরু হচ্ছে। তাতেই লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে।’’

দিলীপের কথার অর্থ স্পষ্ট। লোকসভা নির্বাচন উত্তরবঙ্গে থেকেই শুরু হচ্ছে। প্রথম দফাতেই ১৯ এপ্রিল ভোটগ্রহণ জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক ঝড় দেখা গিয়েছিল। উত্তরের আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতেই জয় পেয়েছিল বিজেপি। জলপাইগুড়ি আসনেই ১ লাখ ৮৪ হাজার ভোটে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু এই মুহূর্তে জলপাইগুড়ি জেলার অনেক অংশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কি রাজনৈতিক ঝড়ের উল্লেখ করা সঙ্গত? এমনই প্রশ্ন উঠেছে। সরাসরি দিলীপের নিন্দা করেছে তৃণমূল। দলের এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘‘দুর্যোগের খবর পেয়ে রবিবার রাতেই জলপাইগুড়ি ছুটে গিয়েছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বিজেপির দিলীপ ঘোষ এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যেও ‘মশকরা’র রসদ খুঁজে পেয়েছেন! তাঁর এই অমানবিক আচরণকে ধিক্কার।’’ এখানেই না থেমে তৃণমূল লিখেছে, ‘‘দিলীপবাবু, মানুষ কেন বার বার জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেই ভরসা রাখেন, সেটা বুঝতে পারছেন তো? বাংলার মানুষই আপনাদের এই ঔদ্ধত্য, অমানবিকতার জবাব দেবেন।’’

এমন অনেক ‘মশকরা’ করেই দিলীপ অতীতে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন। আর সে সবের বেশির ভাগই প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে। এই প্রসঙ্গে টেনে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘অনেক প্রবীণ নেতা, তবু বলব, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর মুখ বন্ধ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। তাতে কাজ হয়নি। এ বার ওঁর প্রাতর্ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত।’’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বর্ধমান শহরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েই মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে ‘আপত্তিজনক’ মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যে দল যে দিলীপের পাশে নেই, তা স্পষ্ট করে দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রকাশ্যে চিঠি দিয়ে নিন্দা করে। দলকে কারণ দর্শানোর পাশাপাশি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতেও বলা হয়। তৃণমূলের নালিশের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও দিলীপের কাছে জবাবদিহি চেয়েছে। সেই বিতর্কের ঢেউ স্তিমিত হতে না হতেই ঝড় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে নিন্দার ঝড়ের মুখে দিলীপ। রাজ্য নেতারা কেউই এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাইছেন না। তবে দলের অন্দরে এমনটা আলোচনা যে, জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও যখন উদ্বিগ্ন, তখন ‘হাসতে হাসতে’ এমন কথা বলে তৃণমূলের হাতে অস্ত্র তুলে দিলেন দিলীপ।

Jalpaiguri Cyclone Dilip Ghosh BJP Leader Controversial Comment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy