E-Paper

সদস্যে ‘জল’ চাইছে না বিজেপি, কাঁটা ‘অতিকথন’

রাজ্য বিজেপির অন্দরে উঠে আসছে অন্য এক ‘ক্ষোভে’র কথাও। অভিযোগ, ‘অত্যুৎসাহী’ নেতাদের একাংশের ‘অতিকথনে’র ফলে সদস্য সংগ্রহের কাজে ‘হতোদ্যম’ হতে হচ্ছে।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:২৪

— প্রতীকী চিত্র।

এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণে কার্যত কালঘাম ছুটছে রাজ্য বিজেপির নেতাদের। হাতে সময়ও কম। ‘পাওয়ার প্লে’তে ‘ঝোড়ো ব্যাটিং’ সত্ত্বেও তাই এখন তাঁদের ভরসা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ‘কৃপা দৃষ্টি’। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির তরফে সময়সীমা অন্তত এক মাস বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সাংগঠনিক রদবদলের কথা মাথায় রেখে শেষ পর্যন্ত এত দিন বাড়তি পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রাজ্য বিজেপি।

রাজ্য বিজেপির অন্দরে উঠে আসছে অন্য এক ‘ক্ষোভে’র কথাও। অভিযোগ, ‘অত্যুৎসাহী’ নেতাদের একাংশের ‘অতিকথনে’র ফলে সদস্য সংগ্রহের কাজে ‘হতোদ্যম’ হতে হচ্ছে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, শুরুতেই প্রচার করা হয়েছে শেষ বার ৮৭ লক্ষ্য সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই এই বছর তাই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে এক কোটি রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে এসে এই লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বিজেপি নেতাদের একাংশের মতে, আগের বার শুধু মিস্ড কলদিলেই সদস্য হওয়া যেত। এই বছর রীতিমত অনলাইন ফর্ম পূরণ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ না-করলে কাউকে সদস্য বলে গণ্যকরা যাবে না।

বিজেপির ওই অংশের দাবি, শেষ বার সদস্যের যে সংখ্যাই বলা হোক না কেন, তার সিংহভাগের কোনও নথিভুক্তিকরণ হয়নি। দলের কাছে থাকা মাত্র সাড়ে ৮ লক্ষ সদস্যের তথ্য মাপকাঠি করে এই বছরের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা উচিত ছিল। তাদের দাবি, গত বছরের সেই সংখ্যা এখনই ছাপিয়ে গিয়েছে। সকলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সদস্য সংগ্রহের কাজে নেমেছেন। দলের তরফে কেন্দ্রীয় ভাবে ‘নজরদারি’র ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে, এই বছর ‘দুধে জল’ মেশানোর সুযোগ নেই।

বিজেপি সূত্রের খবর, শেষ হিসাব পাওয়া পর্যন্ত এখনও ১৬ লক্ষ মিস্ড কল এসেছে সদস্য হতে চেয়ে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করার পরে অন্তত ১২ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ করা গিয়েছে। দৈনিক সদস্য সংগ্রহের গতিও বেড়েছে। নভেম্বরের চতুর্থ রবিবারেও বিশেষ সদস্য সংগ্রহ অভিযান করা হয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, “এক কোটি লক্ষ্যমাত্রা কী ভাবে ঠিক হল? গত বছরের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে সেটা তো ‘জুমলা’! যে ভাবে সংখ্যা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে, তার ফলে এ বারের সৎ প্রচেষ্টা কদর পাচ্ছে না।” সম্প্রতি উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলায় সদস্য সংগ্রহের কাজে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বলেছিলেন, “আমাদের লক্ষ্য আগের বারের চেয়ে সদস্য বাড়ানো। আমরা আগের বারের চেয়ে অনেক ভাল জায়গায় আছি। তবে ‘এ দিল মাঙ্গে মোর’! আমি বলেছিলাম, আমরা এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে নামব। সেই কথা অমিতজি’ও বলেছিলেন।”

আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে দলকে পথে রাখতে গোটা দেশের চেয়ে অনেক পরে বাংলায় সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। তার পরে ছিল উৎসবের মরসুম। তাই বিজেপি নেতারা কার্যত একযোগে সদস্য সংগ্রহের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সম্পাদক ঋতুরাজ সিংহের কাছে সদস্য সংগ্রহে বাড়তি সময় দিতে আবেদন করেছেন। নিয়মমাফিক আগামী ৩০ নভেম্বর সদস্য সংগ্রহ শেষ হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, ১০ থেকে ১৫ দিন বাড়তি পেতে পারে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্যে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “আমরা অনেক দেরি করে শুরু করেছি। তাই আমরা তো বাড়তি সময় চাইবই। কিন্তু দলের তরফে এই প্রকল্পের দায়িত্বে যাঁরা আছেন,তাঁরাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। দল যে দিন শেষ করতে বলবে, আমরা সে দিনই শেষ করে দেব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Political Campaign

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy