প্রস্তুতি: আলিপুরদুয়ারের সভাস্থল। ভিডিয়োয় দেখুন কোচবিহারে সভাস্থলের দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র
একটি লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে আশাবাদী দল। কিন্তু বাজেটে তার মূল বিষয়টি নিয়ে কোনও আলোচনা না হওয়ায় কিছুটা হতাশ।
আর একটি লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে আগে আশাবাদী ছিল দল, কিন্তু এখন ততটা নয়। তবু কর্মী সমর্থকেরা চান, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কিছু বলুন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
আজ, শনিবার দুই সভা শুরু হওয়ার আগে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের কর্মী সমর্থকদের মনের কথা এটাই। মুখের কথাও। নিজেদের এই মনোভাব অনেকেই চেপে রাখছেন না। বরং চাইছেন, কেন্দ্রীয় নেতারা এসে সেই কথা আরও জোর গলায় বলুন।
গত পঞ্চায়েত ভোটে উত্তরবঙ্গে চা বলয়ের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলকে বেগ দিয়েছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে আজ, শনিবার ফলাকাটার জনসভা থেকে সেই চা বাগান নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের প্রতি রাজ্য সরকারের ‘বঞ্চনা’র অভিযোগও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপির জেলা নেতারা।
গত বিধানসভা নির্বাচনে চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও নিজেদের প্রভাব কিছুটা হলেও ধরে রাখতে পেরেছে। ফলে হারানো জমি ফিরে পেতে চা বাগান এলাকায় নানা ধরনের সরকারি কর্মসূচি নেয় প্রশাসন। তৃণমূল নেতাদের কথায়, প্রশাসনের সেই সব কর্মসূচি ও নিয়মিত দলীয় নেতাদের জনসংযোগ রক্ষার ফলে চা বলয়ের হারানো জমি অনেকটাই ফেরানো সম্ভব হয়েছে৷
কিন্তু তাতেও হাল ছাড়তে নারাজ বিজেপির নেতারা৷ তাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র নির্বাচনের আগেই চা বাগানের শ্রমিকদের কথা ভাবে তৃণমূল৷ এই অবস্থায়, ফালাকাটায় আজকের জনসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দলের নেতা রাজনাথ কিছু বার্তা দেবেন বলেই আশা বিজেপি নেতাদের৷
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “চা বাগান ও সেখানে বসবাসকারী শ্রমিকদের উন্নয়নের মূল দায়িত্ব রাজ্য সরকারের৷ কিন্তু শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি থেকে শুরু করে জমির সমস্যা, পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে কোনও উদ্যোগই নেয়নি রাজ্য সরকার৷ উল্টে কেন্দ্রীয় সরকার যখন কয়েকটি বন্ধ বাগান অধিগ্রহণ করতে উদ্যোগী হয়েছিল, তখন ওই বাগানগুলির মালিকদের সঙ্গে নিয়ে রাজ্য সরকার তাতে বাধা দেয়। এই বিষয়গুলি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছু বার্তা দেবেন বলে আশা করি৷” যদিও তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, “বিজেপি নেতারা যে শুধুমাত্র ভাঁওতা দেন, তা চা শ্রমিকরা অনেক আগেই বুঝে গিয়েছেন৷ ফলে বিজেপি নেতারা যে বার্তাই দিন, তাতে করে চা শ্রমিকরা তাঁদের কাছে যাবেন না৷”
কোচবিহারের সমস্যা আবার অন্যরকম। বিজেপি নেতৃত্ব আশা করছেন, রাজনাথের সভার পর নতুন করে তাদের পক্ষে হাওয়া উঠবে এই জেলায়। কেন? এক, বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলা কোচবিহার। উত্তরবঙ্গে সব থেকে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে যে দুটি জেলায়, তার একটি কোচবিহার। এই সীমান্ত গরু পাচার থেকে শুরু করে চোরাচালানকারীদের ‘সেফ করিডর’ হিসেবে পরিচিত। রাজনাথ সিংহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রে সীমান্তের হাল নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য তুলে আনবেন বলেই আশা করছেন বিজেপি কর্মীরা। তার বাইরে কোচবিহার তথা গোটা রাজ্যেই ‘ছিটমহল’ একটি বড় বিষয় ছিল। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই ওই ছিটমহল বিনিময়। এই সমস্যা সমাধানের কৃতিত্ব নিজের পকেটে নেবেন রাজনাথ। এর আগেও তিনি মেখলিগঞ্জের তিনবিঘা পরিদর্শন করেছিলেন।
বিজেপির এক নেতার কথায়, “আমরা চাইছি সভাস্থল উপচে পড়ুক।’’ তাঁদের আশা, তা হবেই। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অবশ্য দাবি করেছেন, দিনহাটা ও তুফানগঞ্জ-সহ একাধিক জায়গায় গাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে তাদের তৃণমূলের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, “তৃণমূল সভায় লোক যাওয়া আটকানোর চেষ্টা করছে।” তৃণমূল অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্য়করি সভাপতি তথা মাথাভাঙার বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বিজেপির কোনও সংগঠন বুথ স্তরে নেই। কিছু লোক হেলিকপ্টার দেখতে যেতেই পারেন। তা আটকানোর কি আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy