Advertisement
০২ মে ২০২৪
Civic Volunteers

স্ত্রী বিজেপি, তাই কি সরানো হল স্বামীকে

২০১৩ সাল থেকে শান্তিপুর থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কর্মরত হরিপুর পঞ্চায়েতের নৃসিংহপুরের বাসিন্দা কার্তিক হালদার।

—প্রতীকী ছবি।

সম্রাট চন্দ
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:১৩
Share: Save:

স্ত্রী জিতেছিলেন বিজেপির টিকিটে। অভিযোগ, তার পর থেকেই দলবদলের চাপ আসতে শুরু করে। ভয়ে বোর্ড গঠনের আগে এলাকাছাড়া ছিলেন দম্পতি। ওই ঘটনার কিছু দিন পরেই কাজ থেকে সরানো হল ওই মহিলা বিজেপি সদস্যের সিভিক ভলান্টিয়ার স্বামীকে। দীর্ঘ দিন অনুপস্থিতি এবং কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে কাজ থেকে অপসারণ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের দাবি, পুলিশ এবং তৃণমূলের যৌথ চাপের কারণেই ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হয়েছিল তাঁদের। ওই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে ব্যাখ্যা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। শীঘ্রই আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা, এমনটাই জানিয়েছেন। তৃণমূলের বক্তব্য, তাঁরা কাউকে কোনও চাপ দেননি।

২০১৩ সাল থেকে শান্তিপুর থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কর্মরত হরিপুর পঞ্চায়েতের নৃসিংহপুরের বাসিন্দা কার্তিক হালদার। বছর দেড়েক আগে তিনি বিয়ে করেন সুপর্ণা বর্মণকে। বিয়ের আগে ২০১৮ সাল থেকেই সুপর্ণা হরিপুর পঞ্চায়েতের বিজেপির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী করে বিজেপি। তিনি হরিপুরের প্রাক্তন প্রধান নমিতা সরকারকে হারান। বিজেপিও ১৬-১৩ ফলে সমিতি জিতে নেয়।

তবে জয়ের পর থেকেই ওই দম্পতিকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। কার্তিকের দাবি, ‘‘খুব চাপ তৈরি হয়েছিল আমাদের উপর। তৃণমূল এবং পুলিশের ভয়ে বাড়িছাড়া ছিলাম, তাই কাজে যোগ দিতে পারিনি।’’ বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, শুধু সুপর্ণা নন, ১৬ জন জয়ী সদস্যকেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল এলাকা থেকে। স্ত্রীর সঙ্গেই বাড়ি ছাড়েন কার্তিক। ১৬ অগস্ট শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের পর তাঁরা বাড়ি ফেরেন। এর কিছু দিন পর কার্তিক কাজে যোগ দিতে গেলে তাঁকে ডিউটি করতে বারণ করে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অনুপস্থিতির কারণ জানাতে বলা হয়।

পুলিশের দাবি, প্রায় দেড় মাস না জানিয়ে অনুপস্থিতি ছিলেন কার্তিক। কার্তিকের কথায়, ‘‘আমরা পুলিশের চাপেই গা ঢাকা দিয়েছিলাম। এর আগে গত ১০ বছরে আমার বিরুদ্ধে কিন্তু অভিযোগ নেই।’’ সুপর্ণার দাবি, ‘‘শান্তিপুরের ওসিও আমাদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তাই বাড়ি ছাড়তে হয়।’’ যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিপুর থানার ওসি সুব্রত মালাকার। রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কে কন্নন বলেন, ‘‘এমন কিছু আমার জানা নেই। কর্তব্যে গাফিলতি এবং দীর্ঘ দিন অনুপস্থিতির কারণে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে কাজ থেকে সরানো হয়েছে। ওঁর কোনও অভিযোগ থাকলে তা লিখিত জানাতে পারেন।’’

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এক জনের রুটি-রুজি বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা আইনের দ্বারস্থ হব।’’ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে শান্তিপুরের বিধায়ক তৃণমূলের ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, ‘‘এটা পুরোপুরি প্রশাসনিক বিষয়। আমাদের দলের তরফে কাউকে কোনও চাপ দেওয়া হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Civic Volunteers BJP police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE