Advertisement
E-Paper

বিধায়ক-মৃত্যুতে সিবিআই তদন্ত চাই, রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানাল বিজেপি

আজ সকালে পুলিশের হাতে আসা ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দেবেন্দ্রনাথ আত্মহত্যা করেছেন বলেই ইঙ্গিত মেলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ১৪:৪৬
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরোচ্ছেন সময় কৈলাস বিজয়বর্গীয়, বাবুল সুপ্রিয়রা। ছবি: পিটিআই।

রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরোচ্ছেন সময় কৈলাস বিজয়বর্গীয়, বাবুল সুপ্রিয়রা। ছবি: পিটিআই।

হেমতাবাদে বিধায়ক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে এ বার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল বিজেপি। তাদের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে রাজ্য পুলিশকে একেবারেই ভরসা করা যায় না। এর আগে, শতাধিক রাজনৈতিক খুনের ঘটনার তদন্তে পুলিশি ব্যর্থতার নজির রয়েছে। তাই হেমতাবাদের ঘটনায় সিবিআই তদন্তই হওয়া চাই। সিবিআই তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি, মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজনৈতিক হিংসা’র বিশদ খতিয়ানও তাঁর সামনে তুলে ধরেন বিজেপি নেতৃত্ব।

সোমবার হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিজেপি। যদিও আজ সকালে পুলিশের হাতে আসা ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দেবেন্দ্রনাথ আত্মহত্যা করেছেন বলেই ইঙ্গিত মেলে। ময়নাতদন্তের সেই রিপোর্ট সামনে আসার আগেই এ দিন সকালে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলায় দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন। রাজ্যে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্ত এবং রাজ্যসভার সাংসদ স্বপনকুমার গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠিও দেন।

সেই চিঠিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের পরিস্থিতি কেমন ছিল, তা-ও উল্লেখ করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘‘২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এ ভাবে গাছে ঝুলিয়ে খুন করেছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা। এই ঘটনা সেই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিল। পুরুলিয়ায় বিজেপির দুই তরুণ নেতা ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলালকুমারকে এ ভাবেই গাছে ঝুলিয়ে খুন করা হয়। তখনও স্থানীয় পুলিশে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল।’’ চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘‘গত কয়েক দশক ধরে রাজনৈতিক হিংসা এবং খুনের ঘটনায় জর্জরিত পশ্চিমবঙ্গ। গত তিন বছরে শাসকদলের গুন্ডাদের হাতে ১০৫ জন বিজেপি নেতা ও সমর্থক খুন হয়েছেন। কিন্তু কোনও অভিযুক্তকেই হেফাজতে নেওয়া হয়নি। তাতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় এই মুহূর্তে রাজ্যে যা পরিস্থিতি, সে দিকে নজর দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি আপনাকে। রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চলছে। নাগরিক নিরাপত্তা এবং রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।’’

আরও পড়ুন: বিধায়ক আত্মঘাতী, ইঙ্গিত পোস্টমর্টেমে, জানালেন স্বরাষ্ট্রসচিব​

আরও পড়ুন: হেমতাবাদের বিধায়কের মৃত্যুতে রহস্য, তদন্তে সিআইডি​

লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন গত বছর কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্ঘের (আরএসএস) লোকেদের কেন্দ্র উর্দি পরিয়ে রাজ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে মন্তব্য করেন তিনি। গণতান্ত্রিক ভাবে ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা’ নেবেন বলে হুঁশিয়ারিও দেন। তাঁর সেই মন্তব্যকেও এ দিন হাতিয়ার করে বিজেপি। চিঠিতে বলা হয়, ‘‘বিরোধী নেতাদের উপর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন মন্তব্য অসাংবিধানিক এবং আইনবিরুদ্ধ।’’

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে হিংসাত্মক রাজনীতি ও ঘৃণার যে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, তার ফলস্বরূপই গোটা রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা মহামারির আকার ধারণ করেছে এবং তৃণমূলআশ্রিত অপরাধীরা নিরীহ মানুষকে নৃশংস ভাবে খুন করছে বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। দেবেন্দ্রনাথ রায় এই নৃশংসতার শিকার বলেও দাবি করেন তাঁরা। নেতৃত্বের দাবি, ‘‘বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্য মৃত্যুর তীব্র নিন্দা করছি আমরা। গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি আমরা। নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে রাজ্য পুলিশকে একেবারেই ভরসা করা যায় না। এর আগে, শতাধিক রাজনৈতিক খুনের ঘটনার তদন্তে রাজ্য পুলিশের ব্যর্থতার নজির রয়েছে।’’

Hemtabad BJP MLA Death Murder BJP Ram Nath Kovind Kailash Vijayvargiya Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy