অমিত শাহ। ছবি পিটিআই।
আপনি কি পশ্চিমবঙ্গের ভোটার? তা হলে অপেক্ষা করুন। যে কোনও দিন আপনার দরজায় হাজির হয়ে যেতে পারেন ভারত সরকারের বা মধ্যপ্রদেশ সরকারের কোনও মন্ত্রী। মিষ্টি হেসে বাড়িতে ঢুকে আপনাকে চমকে দিয়ে ঝরঝরে বাংলায় বলে উঠতে পারেন, ‘‘মাসিমা, মালপো খামু।’’ তার পরে হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে আপনাকে বোঝাতে বসতে পারেন, মোদী সরকার কত ভাল, আর তৃণমূল সরকার কত খারাপ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে তেমনই আয়োজন এবং চেষ্টায় নেমেছে বিজেপি।
আসন্ন বিধানসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গ দখল করতে ঝাঁপালেও রাজ্যের সর্বত্র বুথ স্তরে যে দলের সংগঠন যথেষ্ট মজবুত নয়, তা বিলক্ষণ জানেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই কারণেই ভোটের আগে সব ফাঁকফোঁকর ভরাতে পাঁচ রাজ্য থেকে দলের পাঁচ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)-কে এ রাজ্যে পাঠিয়েছেন তাঁরা। রত্নাকর, ভিখুভাই দলসনিয়া, সুনীল বনশল, পবন রানা এবং রবিন্দর রাজুরা মাসখানেক আগে এ রাজ্য এসে ঘাঁটি গেঁড়েছেন। পাশাপাশি, আট মন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান, গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত, নিত্যানন্দ রাই, অর্জুন মুণ্ডা, নরোত্তম মিশ্র, কেশবপ্রসাদ মৌর্য, মনসুখ মাণ্ডবীয় এবং প্রহ্লাদ সিংহ পটেলকে পাঠানো হয়েছে এ রাজ্যের সর্বত্র রাজনৈতিক প্রচার চালানোর জন্য। রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্র ভাগ করে দেওয়া হয়েছে আট মন্ত্রীর মধ্যে।
বিজেপি সূত্রের খবর, গত শনিবার রাতে একটি অভিজাত হোটেলে দলীয় বৈঠকে এই ১৩ জনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন শাহ। বলেছেন, দলীয় কর্মী এবং ভোটারদের মন জয় করতে বাংলা শেখার চেষ্টা করতে হবে। শিখতে হবে বাঙালির খাদ্যাভ্যাসও। ওই ১৩ জনের মধ্যে যাঁরা নিরামিষাশী, তাঁদের ডাল, ভাত, শাক, সবজির বাঙালি ঘরানার রান্না খাওয়া শিখতে হবে। পাঁচ সাধারণ সম্পাদককে মাসে অন্তত ১৫ দিন এবং আট মন্ত্রীকে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন করে এ রাজ্যে সময় দিতে হবে।
আরও পড়ুন: শুধু আবেদনপত্র নয়, ছবি তুলে আঙুলের ছাপ দিলে তবেই স্বাস্থ্যসাথী
শাহের নির্দেশ পেয়েই বাংলা ভাষা এবং বাঙালির খাদ্যাভ্যাস রপ্ত করার অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন ওই ১৩ জন। যেমন, ভিখুভাই ইতিমধ্যেই বাংলায় কিছু কথা বলতে পারছেন। বই জোগাড় করে বাংলা বর্ণমালা শেখাও শুরু করেছেন তিনি। এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘মাসিমা চা খাব বা কেমন আছেন, যা দিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা শুরু করা যায়, সে সব ওঁরা প্রথমে শিখছেন।’’ পাঁচ সাধারণ সম্পাদক নিজের নিজের কাজের এলাকায় ভাড়াবাড়িতে বা কোনও নেতার বাড়িতে আস্তানা গেড়েছেন। আর আট মন্ত্রী কখনও থাকছেন হোটেলে, আবার কখনও দলীয় নেতার বাড়িতে।
বিজেপি বাইরে থেকে নেতা আনতে শুরু করার পরই ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে প্রচারে নেমেছে তৃণমূল। তার মোকাবিলাতেই ‘ঘরের লোক’ হয়ে ওঠার এই কৌশল বলে রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy