Advertisement
E-Paper

‘উত্তরবঙ্গ’ মন্তব্য করে দলে বিতর্কের মুখে মন্ত্রী সুকান্ত, উত্তরের বিধায়কের মুখেই রাজ্য সভাপতির নিন্দা

বুধবার রাজ্য ভাগ না-করেই উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীকে জমা দেন সুকান্ত। আর বৃহস্পতিবার তার পাল্টা মন্তব্য করলেন বিজেপিরই বিধায়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৩
সুকান্ত মজুমদার।

সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

উত্তরবঙ্গ সংক্রান্ত প্রস্তাব দিয়ে দলের অন্দরেই সমালোচনার মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলের রাজ্য সভাপতির প্রস্তাবকে ‘অবাস্তব’ এবং ‘বাস্তবে সম্ভব নয়’ বলে অভিহিত করলেন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য ভাগ না করেই উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন সুকান্ত। বৃহস্পতিবার তার পাল্টা বিষ্ণু বলেন, “২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন সুকান্ত।” বুধবার সুকান্ত জানিয়েছিলেন, উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থেই তিনি সেখানকার আট জেলাকে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন। বৃহস্পতিবার সুকান্তের প্রস্তাবকে কটাক্ষ করে বিষ্ণু বলেন, “এটা একটা অবাস্তব ধারণা। এটা কোনও দিনই হবে না।” কেন হবে না, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিষ্ণু। তাঁর কথায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদ (নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিল বা এনইসি)-এর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সিকিমের বিশেষ আইন আছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা নেই।” কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়কের দাবি, কোনও রাজ্যের অর্ধেক অংশ কখনও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের অংশ হতে পারে না।

আইনি ব্যাখ্যার পরে সুকান্তকে সরাসরি রাজনৈতিক আক্রমণ করেন তাঁর দলীয় সতীর্থ বিষ্ণু। লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির পরাজয়ের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “২০২৪-এর ফলে তিনি একটু হতাশ রয়েছেন। ২০২৬-এ উত্তরবঙ্গ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে ভেবে উনি সেখানকার মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।” সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বিষ্ণুর সংযোজন, “আমি বিজেপির বিধায়ক হয়ে বলছি, আমি এটা মানব না।” প্রকারান্তরে রাজ্য ভাগের দাবিও উস্কে দিয়েছেন এই পদ্মবিধায়ক। সুকান্তের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “যদি সত্যি তিনি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করতে চান, তবে আগে সেগুলিকে বাংলা থেকে ভাগ করুন। তার পর সেটিকে রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করুন।”

বিজেপির বিষ্ণু-কাঁটা অবশ্য নতুন নয়। লোকসভা ভোটে দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে রাজু বিস্তার নাম ঘোষিত হলে প্রকাশ্যেই তাঁর বিরোধিতা করেন বিষ্ণু। রাজুর বিরুদ্ধে নিজেই নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন ‘পাহাড়ের ভূমিপুত্র’ বিষ্ণু। দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি ফের জয়ী হওয়ার অনেকেই মনে করেছিলেন, দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য বিষ্ণুর বিরুদ্ধে শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে। বাস্তবে অবশ্য তেমন হয়নি। এর আগেও গোর্খ্যাল্যান্ডের পক্ষে সরব হয়ে প্রকাশ্যে সওয়াল করে রাজ্য বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন বিষ্ণু।

বিজেপির অন্দরে বিষ্ণু-কাঁটা উস্কে দিতে শাসকদল তৃণমূল কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়কের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের তরফে ফের দাবি করা হয়েছে যে, উত্তরবঙ্গকে নিয়ে নতুন চক্রান্ত করছে বিজেপি। সংসদে ব্যস্ত থাকায় বিষ্ণুর মন্তব্য নিয়ে কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন এবং শিক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুকান্তের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। বিজেপি মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য উত্তরবঙ্গের ‘বঞ্চনা’র বিষয়টি উল্লেখ করেও বলেন, “রাজ্য বিজেপি বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে। এটাই দলের অবস্থান। অন্য কোথায় কে কী বললেন, তার দায় দলের নয়।”

Sukanta Majumdar North East North Bengal Bishnu Prasad Sharma BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy