Advertisement
E-Paper

প্রার্থীর নাম জানা নেই, জেলায় জেলায় দেওয়াল লিখন শুরু করে দিল বিজেপি

প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখেই বুথে বুথে বিজেপি-র দেওয়াল লেখার উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওই সব দেওয়াল লিখন দেখে একটাই কথা বলতে চাই, এটা হল বিজেপির বর্তমান অবস্থার প্রতীক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ২১:৫৬
প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখেই বীরভূমে দেওয়াল লিথন বিজেপি-র— নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখেই বীরভূমে দেওয়াল লিথন বিজেপি-র— নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। দলের তরফে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ তো দূরস্থান! কিন্তু ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি-র দেওয়াল লিখন। প্রার্থীর নাম বাদ রেখে দলের প্রতীক এঁকে দেওয়াল ভরিয়ে ফেলছে শাসক এবং বিরোধী শিবির। বীরভূমের ইলামবাজার, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর দেওয়ালে দেখা মিলছে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখে সদ্য আঁকা পদ্মের। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামেও বিজেপি দেওয়াল লেখা শুরু করেছে। তবে সেখানে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা নেই।

২০১১ সালে বামশাসনের অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নন্দীগ্রামের। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রেই জিতে মন্ত্রী হন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এখন সেখানে ফের ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ বইছে বলে বিজেপি-র দাবি। শুক্রবার নন্দীগ্রামের বয়াল-১ পঞ্চায়েতের প্রধান পবিত্র কর, উপপ্রধান বিশ্বজিৎ ভুঁইয়া-সহ অধিকাংশ পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি-তে যোগ দেন। শনিবার সকালে তাঁদের নেতৃত্বেই এলাকায় দেওয়াল লেখার কাজ শুরু হয়। প্রার্থীর নামটুকু বাদ রেখে পদ্ম প্রতীক এঁকে নন্দীগ্রামবাসীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ফের পরিবর্তনের স্রোতে সামিল হওয়ার। পবিত্র বলেন, ‘‘প্রার্থীর নাম আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। দল যাঁকে প্রার্থী করবে আমরা তাঁর হয়েই ভোটের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’’

যদিও নন্দীগ্রামে বিজেপি-র এই তৎপরতাকে আমল দিতে চাননি একদা জমি রক্ষা আন্দোলনের পরিচিত মুখ তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষ একসময় সিপিএমকে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন। এ বার বিজেপি-কে শিক্ষা দেবেন।’’ অন্য দিকে, বিজেপি-র তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে অন্য বিধানসভাগুলিতেও প্রার্থীর নাম ছাড়াই দেওয়াল লেখার কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের তরফে নির্দেশ এসেছে, প্রতিটি বুথে ৫টি করে দেওয়ালে দলের প্রতীক এঁকে ভোট প্রচার শুরু করতে হবে।’’

বীরভূমের ইলামবাজার এলাকায় আগেই দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করে দিয়েছিল বিজেপি। এত তাড়াহুড়ো কেন? বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা প্রচারে এগিয়ে থাকতে চাই। উদ্দেশ্য, মানুষ যাতে আমাদের উপস্থিতি বুঝতে পারেন। আপাতত ইলামবাজার এলাকায় দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করেছি। দ্রুত জেলা জুড়ে কাজ শুরু হবে।’’ বিধানসভা ভোট ‘পাখির চোখ’ করে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল। বীরভূমে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বুথে বুথে কর্মিসভা করছেন। ইলামবাজারে ‘তৃণমূলকে ভোট দিন’ বলে দেওয়াল লেখা হয়েছে। তবে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখে কোথাও দেওয়াল লেখা হয়নি। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘এখানে আমরা বিজেপির মিথ্যা প্রচার আটকাতেই দেওয়াল লেখা শুরু করেছি।’’

আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের পাক হামলা নওশেরায় নিহত জওয়ান

বিজেপি-র কর্মীরা ‘প্রার্থীহীন’ দেওয়াল লিখন শুরু করেছেন বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রেও। শনিবার সকালে পূর্ব চাঁদপাড়ায় জোরকদমে চলছিল কাজ। বিজেপি-র স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি প্রশান্ত রায়ের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্রে শান্তনু ঠাকুর জেতার পর এলাকায় দলের সংগঠন অনেক মজবুত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দলের নির্দেশে প্রাথমিক ভাবে দেওয়ালে প্রতীক আঁকা হচ্ছে । প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর পূর্ণোদ্যমে দেওয়াল লিখন শুরু হবে। ২০২১ সালে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে। আগে থেকে তা জানান দেওয়ার জন্যই দেওয়াল লেখার এই কর্মসূচি।’’ তবে বিজেপি-র এই প্রস্তুতিকে তেমন আমল দিতে চান না বনগাঁ দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস। তিনি বলেন,‘‘বিজেপি একটি রাজনৈতিক দল। তারা তাদের প্রস্তুতি নেবে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘সিপিএমের ভোট নিয়ে ২০১৯-এ কিছু লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছে বিজেপি। কিন্তু এবার এখানে সমস্ত বুথে বিজেপি এজেন্ট দিতেই পারবে না। সিপিএম ভোট না দিলে তৃতীয় স্থানে চলে যাবে।’’

আরও পড়ুন: কিষেণজির মৃত্যু বার্ষিকীর আগে জঙ্গলমহল ছাড়ল ১৪ কোম্পানি সিআরপিএফ

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘আমরা কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি সারা রাজ্যে দেওয়াল লেখা শুরু করতে। বিজেপির কথা, কেন্দ্রীয় সরকারের কথা, কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্প এবং তার সাফল্য তুলে ধরতে বলা হয়েছে। তবে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখে দেওয়াল লেখার কোনও নির্দেশ আমরা দিইনি। কর্মীরা হয়তো কোথাও কোথাও অতি উৎসাহে ওই সব করেছেন।’’

প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখেই বুথে বুথে বিজেপি-র দেওয়াল লেখার উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওই সব দেওয়াল লিখন দেখে একটাই কথা বলতে চাই, এটা হল বিজেপির বর্তমান অবস্থার প্রতীক। যে জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে, সেখানে আদি বিজেপি-র নাম বসবে না কি তৎকাল বিজেপি-র নাম বসবে, সেটা এখনও ওঁরা নিজেরাই বুঝতে পারছেন না!’’

BJP TMC Wall Writing Nandigram birbhum bangaon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy