Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Dilip Ghosh

Dilip Ghosh: গরু-ছাগল নাকি যে আটকে রাখব! বিজেপি বিধায়কদের দলবদল নিয়ে কটাক্ষ দিলীপের

এক সপ্তাহের মধ্যে গেরুয়া শিবির ছেড়ে জোড়াফুল হাতে তুলে নিয়েছেন বিজেপি-র তিন বিধায়ক। এই মুহূর্তে দলের বিধায়কসংখ্যা ৭১-এ নেমে গিয়েছে।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:৩৮
Share: Save:

ছিল ৭৭। হল ৭১। বিজেপি বিধায়কদের দলবদল নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘‘গরু-ছাগল নাকি যে আটকে রাখব।’’

বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ আসনের হুঙ্কার সত্ত্বেও এ রাজ্যে ১০০ ছুঁতে পারেনি বিজেপি। ৭৭ আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তবে সেই সংখ্যাও নামতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে গেরুয়া শিবির ছেড়ে জোড়াফুল হাতে তুলে নিয়েছেন বিজেপি-র তিন বিধায়ক। আর দুই সাংসদ বিধায়ক হিসাবে জিতেছিলেন। পরে সাংসদ থাকবেন বলে বিধায়কের পদ ছেড়ে দেন। ফলে এই মুহূর্তে দলের বিধায়কসংখ্যা ৭১-এ নেমে গিয়েছে। ৭১-এ নেমে রোষ চেপে রাখতে পারেননি দিলীপ।

রবিবার বীরভূম জেলায় সিউড়িতে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ। সেখানেই সাম্প্রতিক দলবদলুদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। মূলত তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে আসাদের এবং ফের জোড়াফুলে ফিরে যাওয়াদের নিশানা করেন দিলীপ। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ কালিয়াগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায়। শনিবার যিনি বিজেপি থেকে ফের তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। দিলীপের দাবি, “প্রথম থেকেই দলের ৪-৫-৬ জনের সমস্যা ছিল। কিন্তু যাঁরা ওঁদের জিতিয়েছিলেন, তাঁরা এখনও আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। গরু-ছাগল নাকি যে আটকে রাখব? রাজনীতিতে যে দিকে পাল্লা ভারী থাকে, সে দিকে লোক চলে যায়।”

ঘটনাচক্রে, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরই বিজেপি ছেড়েছেন মুকুল রায়। যদিও কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে বিজেপি-র টিকিটে জিতলেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি মুকুল। তবে মুকুলের দলবদলের পরই এক সপ্তাহের মধ্যে তিন বিধায়ক দল ছেড়েছেন। সোমবার তৃণমূলে ফেরেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। মঙ্গলবার বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে ফেরেন। এর পর শনিবার ঘরে ফিরে গিয়েছেন সৌমেন। সব দেখেশুনে দিলীপের মন্তব্য, “মুকুলবাবু যদি চলে যেতে পারেন, তা হলে যে কেউ চলে যেতেই পারে। দলবদল এখন ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে।”

তবে দলবদলের ফ্যাশনে শাসকদলের দিকেই অভিযোগের তির ছুড়েছেন দিলীপ। শাসকদলের নাম না করেও এই দলবদলুদের চাপ দিয়ে বা প্রলোভন দিয়ে নিজেদের দিকে টানার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। দিলীপের দাবি, “তিন-চার জন এখনও রয়েছেন, যাঁরা দলের কাজে আসেননি। তবে অন্য দলের থেকে যাঁদের নিয়ে আমরা প্রার্থী করেছিলাম, দলে প্রথম থেকেই এঁদের নিয়ে বিরোধ ছিল। কিন্তু তা-ও আমরা তাঁদের জায়গা দিয়েছি। তাঁরা জিতে এসেছেন। এখন তাঁদের হয়তো কোনও অসুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন রকম ব্যক্তিগত সুবিধা, ব্যবসা-বাণিজ্য অথবা কাউকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, ভয় দেখানো হচ্ছে, লোভ দেখানো হচ্ছে। যাঁরা হজম করতে পারছেন না, তাঁরা চলে যাচ্ছেন।”

তবে দিলীপের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিধায়কেরা যে ভুল বুঝতে পেরে ফের ঘরে ফিরছেন, সে দাবি করেছেন তাঁরা। বীরভূম জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলেন, “আমরা দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়ে কিছু বলব না। মানুষ যেমন ভুল বুঝতে পারছে, ঠিক তেমন বিধায়করাও তাঁদের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh BJP TMC soumen roy party switchers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE