সিঙ্গুরে দিলীপ ঘোষ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারিতে আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট হবে। বৃহস্পতিবার হুগলির সিঙ্গুরে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তাতে ভয় দেখানোর আর লোক পাওয়া যাবে না।’’
সিঙ্গুরের বলরামবাটি পঞ্চায়েতের বুড়ি গ্রামে কৃষকদের সঙ্গে চা চক্রে যোগ দিতে এসেছিলেন দিলীপ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের যে কৃষকেরা আছেন, তাঁদের সমস্যা শোনার জন্যই আজ এখানে এসেছি। জমি বাঁচাও আন্দোলনের জন্য সিঙ্গুরের নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু যে অধিকারের দাবিতে চাষিরা আন্দোলন করেছিলেন, সেই অধিকার কি পেয়েছেন? আজ কারখানা নেই। চাষ নেই। চাকরিও নেই। অথচ সিঙ্গুরের জমি সবচেয়ে বেশি উর্বর।’’
দিলীপের দাবি, ‘‘বামেদের প্রথম ভুল ছিল, সিঙ্গুরের তিন ফসলি জমির উপর কারখানা করা। কারখানা বন্ধ করে ভুল করলেন মমতা। মানুষের পেটে লাথি মারলেন আর জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেলেন।’’ তাঁর অভিযোগ, হুগলিতে প্রচুর আলুর চাষ হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে ৬ টাকা কিলোগ্রাম দরে আলু বিক্রি হলেও খুচরো বাজারে তা কিনে খেতে হয়েছে ৪০ টাকায়। তিনি বলেন, ‘‘কৃষকেরা খরচ করে চাষ করবেন, আর মুনাফা লুটবে দালালরা। এখানকার আলু ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার যেত। দিদিমণি বন্ধ করে দিলেন। পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন আলু বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হিমঘরে আলু আটকে রেখে দালালরা মুনাফা লুটছে।’’
দিলীপের দাবি, ধানের ক্ষেত্রেও দালালচক্রের দাপট বেড়ে চলেছে। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনে না, দালালদের কাছ থেকে কেনে। সারা দেশে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ১৪ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এখানে ৯ কোটি চাষীদের কেউ তা পাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন মুখ্যমন্ত্রী থাকবে আয়ুষ্মান ভারত-সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা কেউ পাবেন না। রাজ্যে বিজেপি সরকার যেদিন আসবে, সেদিন টাকা পাবেন।’’
দুর্নীতি প্রসঙ্গে তৃণমূলতে খোঁচা দিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘আমফানের হাজার কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেল। টাকা পেল তৃণমূলের পঞ্চায়েতের প্রধান আর তার ভাই-আত্মীয়েরা। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে টাকা দিলে পেট্রোলের মত উধাও হয়ে যায়।’’
শুভেন্দু অধিকারী কবে বিজেপি-তে যোগ দেবেন প্রশ্ন করা হলে, দিলীপ বলেন, ‘‘সেটা উনিই বলতে পারবেন। আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। তবে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া ছাড়া আর কোনও জায়গা নেই। আগে যাঁরা দিদি করতেন এখন তাঁরা দাদা দাদা করছেন। তৃণমূল থেকে কে আসবেন জানা নেই। বিজেপি যোগ্য লোক দিয়ে সারা দেশে পার্টি চালাচ্ছে,বিজেপি যোগ্য লোককে যোগ্য সম্মান দেবে।’’
আরও পড়ুন: কাঁথিতে শুভেন্দুর সহায়তা কেন্দ্র পুনর্দখল তৃণমূলের, ছেঁড়া হল ছবি
দিলীপের মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ আলটপকা মন্তব্য করে দিচ্ছেন। আমরা কিন্তু জানি, আমাদের কী করতে হবে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে হুগলিতে ১৬টি আসন পেয়েছিলাম। এবার ১৮ টাই জিতব।’’
আরও পড়ুন: ভার্চুয়াল বৈঠকে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বার্তা দিলেন মোদী-হাসিনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy