রথে চড়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোট-যাত্রায় বেরোতে চায় রাজ্য বিজেপি! গত বছর লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে প্রায় ১৭% ভোট পেয়ে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল তারা। এই মর্মে হইচইও কম হয়নি। কিন্তু পুরভোটে বিজেপি-র ফলাফল থেকে বোঝা গিয়েছে, এ রাজ্যে তাদের জনপ্রিয়তার লেখচিত্র এখন নিম্নগামী। সেই লেখচিত্রকেই ফের ঊর্ধ্বমুখী করতে রাজ্য বিজেপি-র নয়া পরিকল্পনা— রথে চড়ে বঙ্গের আসমুদ্র হিমাচল ভ্রমণ করে তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের ডাক দেওয়া!
বিজেপি সূত্রের খবর, বিহারে ভোট হয়ে গেলেই এ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য ঝাঁপাবেন দলের নেতা-কর্মীরা। সে সময়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রচারের ঢেউ তুলতে দু’টি রথ বার করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। একটি রথ বেরোবে কোচবিহার থেকে। অন্যটি আসানসোল থেকে। কোচবিহার থেকে যে রথ বেরোবে, সেটি গোটা উত্তরবঙ্গ ঘুরে কৃষ্ণনগরে যাত্রা শেষ করবে। আসানসোল থেকে বেরোনো রথটি ঘুরবে রাজ্যের বাকি অংশ। রথের রশি কখনও থাকবে রাজ্য নেতাদের হাতে, কখনও কেন্দ্রীয় নেতা বা মন্ত্রীদের হাতে। গোটা রথযাত্রা পর্বে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০০ সভা করার পরিকল্পনা হচ্ছে এবং যাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আনার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়াও বিধানসভা ভোটের আগে মোদীকে দিয়ে আরও তিনটি সভা করানোর চেষ্টা করছেন বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব।
রথযাত্রা অবশ্য বিজেপি-র ইতিহাসে নতুন নয়। তাদের ‘লৌহপুরুষ’ লালকৃষ্ণ আডবাণী অতীতে অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ার দাবিতে এক বার এবং ইউপিএ সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে আর এক বার রথযাত্রা করেছিলেন। গত বছর লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য বিজেপি-র জাদুরথ প্রকাশ্যে এনেছিলেন জাদুকর পি সি সরকার (জুনিয়র)। বিধানসভা ভোটের আগে ফের রথেই চড়তে চাইছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য এখনই এই রথযাত্রার পরিকল্পনা নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ শুধু বলেন, ‘‘রথযাত্রার একটা সম্ভাবনা আছে। তবে বিষয়টা এখনও ভাবনাচিন্তার স্তরেই।’’ মোদী বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় নেতা রথযাত্রা পর্বে রাজ্যে আসবেন কি না, তা-ও ঠিক হয়নি বলে সিদ্ধার্থনাথ জানান।
দলে শৃঙ্খলার রাশ কঠোর করতে হাওড়ার সালকিয়ার কৃষ্ণা ভবনে বৃহস্পতিবার বিজেপি-র দু’দিনের প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে। রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ দিন দলের কার্যপদ্ধতি নিয়ে বক্তৃতা করতে গিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন। বিশেষত, এ রাজ্যে দলের একমাত্র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের প্রতি কৈলাসের পরামর্শ— বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। আদর্শবাদী কর্মী গড়া, কর্মীদের সকলকে গুরুত্ব দেওয়া এবং তাঁদের মিলেমিশে কাজ করার উপরেও জোর দিয়েছেন কৈলাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy