Advertisement
E-Paper

চোখ এড়িয়ে সটান হানা লালবাজারে

বজ্র আঁটুনি ছিল। কিন্তু ফস্কা গেরোয় তিন-তিন বার ‘গোল’ খেল কলকাতা পুলিশ! বিভিন্ন রাস্তায় বিজেপি নেতাদের আটকে দিলেও তিন বার বিজেপি কর্মীরা পৌঁছে গেলেন লালবাজারের গেটে। তার মধ্যে দু’টি দল ওত পেতে ছিল লালবাজারের সদর দরজার উল্টো দিকের বাড়িতেই!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০২:২৮
ব্যূহ: উর্দিধারীতে ছয়লাপ লালবাজারের মুখ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

ব্যূহ: উর্দিধারীতে ছয়লাপ লালবাজারের মুখ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

বজ্র আঁটুনি ছিল। কিন্তু ফস্কা গেরোয় তিন-তিন বার ‘গোল’ খেল কলকাতা পুলিশ! বিভিন্ন রাস্তায় বিজেপি নেতাদের আটকে দিলেও তিন বার বিজেপি কর্মীরা পৌঁছে গেলেন লালবাজারের গেটে। তার মধ্যে দু’টি দল ওত পেতে ছিল লালবাজারের সদর দরজার উল্টো দিকের বাড়িতেই!

সকাল থেকেই লালবাজারকে দুর্গের চেহারা দিয়েছিল পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ওই চত্বরের সব দোকানপাট। লালবাজারের ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে দেওয়া হচ্ছিল না জনতাকে। উল্টো দিকের ফুটপাথে একটু দাঁড়ালেও তেড়ে আসছিল পুলিশ। দুর্গ আগলাতে দলবল নিয়ে পাহারায় ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার (৫) বিশাল গর্গ।

চেনা রাস্তার এমন অচেনা চেহারা দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন অফিস চত্বরের নিত্যযাত্রীরা। কেউ চটজলদি মোবাইলে ছবি তুলে নিয়েছেন, কেউ বা সাংবাদিকদের কাছে জানতে চেয়েছেন, ‘‘কী হয়েছে বলুন তো?’’

দুপুরের দিকে নদিয়া থেকে আসা জনা আঠেরো বিজেপি সমর্থক বাস নিয়ে প্রায় লালবাজারের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের মোড়ে সেই বাস আটকে ওই বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। তার পর থেকেই পুলিশ একটু সতর্ক হয়েছিল।

আরও পড়ুন: দু’দিনে পুলিশের দুই ছবি দেখল কলকাতা

দুপুর দুটো। ফিয়ার্স লেন, ব্রেবোর্ন রোডে মিছিল আটকে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষের মতো প্রথম সারির নেতারা। পুলিশের চেহারাতেও একটু নিশ্চিন্তির ছায়া। আচমকাই লালবাজারের উল্টো দিকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল ছ’জনের একটি দল। দলীয় পতাকা নিয়ে সটান সদর দরজায়। গেট বন্ধ থাকায় তাঁরা ভিতরে ঢুকতে পারেননি। প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও ছ’জনকে পাকড়াও করা হয়। শুরু হয় লাঠি চালানো। আশপাশের বাড়িতেও তল্লাশি শুরু হয়। কিন্তু মধ্য কলকাতা জুড়ে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনির ফাঁকে খোদ লালবাজারের সামনে ফস্কা গেরোর ছবিটা তত ক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে!

বিকেল তিনটে। মিছিলের ডিউটি শেষের বার্তা এসেছে কন্ট্রোল রুম থেকে। গরমে হা-ক্লান্ত পুলিশকর্মীরা ফিরে যাচ্ছেন নিজেদের ঘরে। আচমকাই ফের উল্টো দিকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন জনা ছয়েক লোক। ফের হানা লালবাজারের গেটে! এ বারও ঢুকতে পারেননি। এ বারও ঘোল খেয়ে গিয়ে তেজ বেড়ে গিয়েছিল পুলিশের। এলাকায় শুরু হল লাঠিচার্জ। বাড়ি বা়ড়ি ঢুকে তল্লাশি। বিকেল পৌনে চারটেতেও ফের এক দল বিজেপি সমর্থক লালবাজারের সামনে হাজির হন। তবে তৃতীয় বার সদর দরজার গেটে পৌঁছনোর আগেই বিক্ষোভকারীদের পাকড়াও করে ভিতরে নিয়ে যায় পুলিশ।

চার দিকে পুলিশের এত কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা লালবাজারের গেটে পৌঁছলেন
কী ভাবে?

পুলিশের ব্যাখ্যা, আচমকা জনা কয়েক হাজির হয়েছেন। লালবাজারের ভিতরে ঢোকার আগেই তাঁদের পাকড়াও করা হয়েছে। তবে উল্টো দিকের বাড়িতে বিজেপি সমর্থকেরা থাকা সত্ত্বেও গোয়েন্দারা সে খবর পেলেন না, এটা ব্যর্থতা হিসেবেই মেনে নিয়েছেন পুলিশের একাংশ।

Lalbazar Police BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy