E-Paper

সীমান্ত সমীক্ষায় যুব বিজেপির বিশেষ নজরে কোচবিহার-মালদহ

সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই যুব মোর্চা সীমান্তবর্তী গ্রামে রাত্রিবাসের সিদ্ধান্ত নেয়।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:২৬
Representational image of BJP.

সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করেছে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। প্রতীকী ছবি।

আড়াই দিন সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করেছে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। এই রিপোর্ট তারা তুলে দিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার কাছে। রাজ্য সফরে এলে রিপোর্ট দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও। সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যের ১৫টি সীমান্তবর্তী সাংগঠনিক জেলার মধ্যে কোচবিহার ও মালদহ দক্ষিণে রেকর্ড সংখ্যক বাড়িতে ঘুরেছেন সংগঠনের সদস্যেরা। যেখানে বনগাঁ ও দার্জিলিং জেলায় শ’পাঁচেক বাড়িতে গিয়েছেন যুব মোর্চার কর্মীরা, সেখানে কোচবিহারে প্রায় দু’হাজার ও মালদহ দক্ষিণে প্রায় দেড় হাজার বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন তাঁরা।

কিন্তু এই দুই জেলায় বিশেষ নজর কেন? গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে সীমান্তবর্তী কোচবিহারে বিজেপি জিতলেও বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ক্রমশ তারা মাটি হারাতে শুরু করে। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের বাড়তি তাগিদ রয়েছে তাদের।

পাশাপাশি, সীমান্তবর্তী এই এলাকায় অনুপ্রবেশ, গরু পাচার-সহ একাধিক বিষয়ে বিজেপি শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব। সে সব নিয়েও জনমত যাচাই করে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে সমীক্ষায়। রিপোর্টে এলাকার সমস্যা হিসেবে গরু পাচারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। লোকসভায় মালদহ দক্ষিণ আসনটি কংগ্রেস জিতলেও বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে ব্যবধান খুব একটা বেশি ছিল না। ফলে ২০২৪ সালে ২৪ আসনের লক্ষ্যে বিজেপি যে এই আসনটিকেও নিশানা করবে, সেটা তাদের এই রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট।

সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই যুব মোর্চা সীমান্তবর্তী গ্রামে রাত্রিবাসের সিদ্ধান্ত নেয়। জানুয়ারির ২০-২২ তারিখ তারা বাংলার ৮২টি গ্রামের ১০ হাজার ৭৭০টি পরিবারের কাছে পৌঁছেছে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তারা ১১টি প্রশাসনিক জেলার ৫৫টি গ্রামসভায় ১১টি বাইক মিছিল করেছে।

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে মোদীর বার্তা পেয়েই বিজেপির রাজ্য নেতারা বারবার বলেছেন, ভোটের আশা না করে সংখ্যালঘু মুসলিমদের কাছে পৌঁছতে হবে। যুব মোর্চারা কার্যত সেই কথা মাথায় রেখেই এমন গ্রামগুলি বাছাই করেছিল, যে গ্রামগুলিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও বসবাস করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, সূত্রের খবর, সেখানে রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষের বঞ্চিত হওয়াকে মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিলিগুড়ি ও কোচবিহারে গরু পাচারের পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরে মাদক পাচার, নদিয়া উত্তরে অনুপ্রবেশ, বনগাঁয় কাঁটাতার-বিহীন আন্তর্জাতিক সীমান্তকে সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে পানীয় জল, নেটওয়ার্ক, দার্জিলিঙে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, উত্তর দিনাজপুরে বেহাল রাস্তাকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই নিয়ে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। সীমান্ত পাহারা দেওয়া বিএসএফের কাজ। কিন্তু রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন সহযোগিতা না করায়, বিএসএফকে চৌকি তৈরি করতে না দেওয়ায়, সীমান্তের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। আমরা মানুষের মুখ থেকে সেই সব অভিযোগ শুনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠাচ্ছি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJYM Cooch Behar Maldah BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy