Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টি ও বসন্তের যুগলবন্দি পেরিয়ে রুদ্ররূপ ধরছে চৈত্র

সকালের মেঘলা আকাশ, মোলায়েম আবহাওয়া দেখে আনমনা হয়ে পড়েছিলেন এক স্কুলশিক্ষক। বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছিলেন, ‘এমন দিনেও স্কুলে গিয়ে পরীক্ষার পাহারাদার হতে হবে!’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০৪:২১
Share: Save:

সকালের মেঘলা আকাশ, মোলায়েম আবহাওয়া দেখে আনমনা হয়ে পড়েছিলেন এক স্কুলশিক্ষক। বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছিলেন, ‘এমন দিনেও স্কুলে গিয়ে পরীক্ষার পাহারাদার হতে হবে!’ বেলা গড়াতেই অবশ্য মেঘ কেটে বেরিয়ে এসেছিল রোদ্দুর। তবে আবহাওয়ার মোলায়েম ভাবটা কাটেনি! স্কুলের ক্লাসঘরে স্বস্তিতেই ‘পাহারা’ দিয়েছেন ওই শিক্ষক।

হাওয়া অফিস অবশ্য বলছে, এমন স্বস্তির পালা এ বার শেষ। ধীরে ধীরে নিজের আসল রূপ মেলে ধরতে চলেছে চৈত্র! ফুটিফাটা গরম হয়তো এখনই পড়বে না, তবে কয়েক দিনের মধ্যেই তেজ বাড়বে রোদের। মিলবে গ্রীষ্মের মেজাজের আঁচও।

বঙ্গোপসাগরের থেকে অতিরিক্ত জোলো হাওয়ার জোগানে চৈত্রের শুরুটা হয়েছিল মোলায়েম ভাবেই। দিন কয়েক জোরালো বৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টি কমে যাওয়ার পরেও পারদ সে-ভাবে চ়়ড়তে পারেনি। ফলে মোটামুটি স্বস্তিতেই কেটেছে কয়েকটা দিন। গভীর রাতে বা ভোরে শীত-শীত ভাবও মালুম হয়েছে। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, সোমবার বেলা আড়াইটেয় কলকাতার তাপমাত্রা ছিল ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাধারণ ভাবে মার্চের কোনও দুপুরে মহানগরীর তাপমাত্রা এত কম থাকে না।

আবহাওয়ার এই মোলায়েম, আরামদায়ক ছবিটা এ বার ধীরে ধীরে বদলে যাবে। কিন্তু কেন? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়ার জোগান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতিও আর নেই। ফলে আজ, মঙ্গলবার থেকেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি কলকাতার তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেশি হতে পারে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। হাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, চলতি সপ্তাহের শেষেই বাঁকুড়ার মতো পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় দিনের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে।

শীতকে এ বার তার প্রকৃত রূপে পাওয়া যায়নি বললেই চলে। ফেব্রুয়ারিতে যে-ভাবে পারদ চড়তে শুরু করেছিল তাতে প্রমাদ গুনেছিলেন অনেকেই। গ্রীষ্ম এ বার এগিয়ে আসবে কি না, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মার্চ থেকেই বদলে গিয়েছিল আবহাওয়া। পারদের উত্থানে যেমন লাগাম পড়েছিল, তেমনই জোলো হাওয়া থেকে ক্রমশই দানা বাঁধছিল বজ্রগর্ভ মেঘ। সেই মেঘই বসন্তের বঙ্গে বারবার জোরালো বৃষ্টি ঝরিয়েছে। হাওয়া অফিসের খবর, মাস এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু বৃষ্টির নিরিখে এখনই গত এক দশকের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে চলতি বছরের মার্চ।

অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তা হলে কি এমন ঝড়বৃষ্টি আর মিলবে না? আবহবিদেরা অবশ্য একেবারে নিরাশার কথা শোনাচ্ছেন না। তাঁরা বলছেন, গরমকালে আচমকা বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে ঝড়বৃষ্টি হতেই পারে। অর্থাৎ কালবৈশাখী। আগামী দিন চারেক কালবৈশাখীর তেমন সম্ভাবনা নেই। তার পরে আচমকা স্বস্তির বার্তা নিয়ে হাজির হতেই পারে সে।

গরমের পূর্বাভাসের মধ্যে আশা বলতে আপাতত এটুকুই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Depression Alipore Weather Office Hailstorm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE