বীরপুরুষ: ... চুমো খেয়ে নিচ্ছ আমায় কোলে। —নিজস্ব চিত্র
সাদা রঙের গাড়িটা থামতেই বেজে উঠল শাঁখ। বরণডালা হাতে এগিয়ে গেলেন প্রতিমা ভগত। পরিচিতদের দেখে গাড়িতে বসেই একগাল হেসে ফেলল দিব্যাংশ। ধান-দুর্বা, ফুল দিয়ে নাতিকে বরণ করলেন প্রতিমা। চন্দনের তিলক কেটে দিলেন কপালে। মুখে দিলেন দুধ-সন্দেশ। তার পরে কোলে চাপিয়ে নিয়ে গেলেন ঘরে।
চোদ্দ দিন পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ভাবেই ঘরে ফিরল পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় জখম দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া দিব্যাংশ ভগত। তাকে দেখে স্বস্তি ফিরল পড়শিদেরও। বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিল দিব্যাংশ। তাকে নিয়ে ওই দিন কলকাতাতেই ছিলেন বাবা-মা। বাবা গোপীনাথ জানান, এ দিন সকালে দিব্যাংশকে সুজি খেতে দেওয়া হয়। দুপুরে খিচুড়ি দেওয়া হয়। বিকেলে গাড়িতে চেপে রওনা হন বৈদ্যবাটীর মধুসূদন গুপ্ত লেনে বাড়ির পথে। দিব্যাংশকে কোলে নিয়ে ঘরে ঢোকার আগে বেল বাজান প্রতিমা। নাতিকে ঠাকুরঘরে, তুলসী মঞ্চের সামনে নিয়ে যান প্রতিমা। তার পরে ছেলেকে দোতলার ঘরে নিয়ে যান মা রিমা। গোটা পর্বেই মুখে হাসিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছিল দিব্যাংশ। তবে, বিশেষ কথা বলেনি।
গোপীনাথ বলেন, ‘‘ছেলে এমনিতে চঞ্চল। খুব কথা বলে। তবে, এখন একটু চুপচাপ হয়ে গিয়েছে। এখনও শারীরিক ভাবে দুর্বল। ডাক্তাররা বলেছেন, একমাস বিশ্রামে রাখতে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াতে। এক মাস পরে ফের চেকআপ করাতে বলেছেন।’’ তিনি জানান, দিব্যাংশকে রাতে চিকেন স্ট্রু দেওয়া হবে। প্রতিমা বলেন, ‘‘ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছিলাম যাতে দিব্যাংশ দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরে। ভগবান প্রার্থনা শুনেছেন। আমরা খুব খুশি। পাড়ার লোকেরাও।’’
দিব্যাংশকে দেখতে এসেছিল পড়শি বালিকা অমৃতা গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে রাখী। দিব্যাংশের খেলার সঙ্গী। তাকে দেখেই গাড়িতে বসে ‘রাখীপিসি’ বলে ডাকে দিব্যাংশ। আনন্দে কেঁদে ফেলে মেয়েটি। সে বলে, ‘‘অনেক দিন রামনকে (দিব্যাংশের ডাকনাম) দেখিনি। ওকে দেখে খুব আনন্দ হচ্ছে। ও পুরো সুস্থ হলে আবার আমরা খেলব।’’
ঠাকুমার বরণডালায় প্রিয় ক্যাডবেরিও ছিল। এক বারের জন্যও সেটি হাতছাড়া করেনি দিব্যাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy