Advertisement
E-Paper

স্বামীকে খুনের পর দিনই দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেয় স্ত্রী!

অস্ত্রোপচার হয়েছিল স্ত্রীর। কিছু দিন বাপের বাড়িতে ছিলেন। উদ্বিগ্ন স্বামী তাকে দেখভালের জন্য অফিস থেকে ছুটিও নিয়েছিলেন। কিন্তু স্ত্রী প্রেমিকের সঙ্গে ঠিক করে রেখেছিল, যে দিন প্রথম বাড়ির বাইরে পা রাখবে, সে দিনই খুন হবেন স্বামী। হলও তেমনই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:১৩
তদন্ত: অনুপম-হত্যার পুনর্নির্মাণে অজিতকে নিয়ে পুলিশ। শুক্রবার, বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

তদন্ত: অনুপম-হত্যার পুনর্নির্মাণে অজিতকে নিয়ে পুলিশ। শুক্রবার, বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

অস্ত্রোপচার হয়েছিল স্ত্রীর। কিছু দিন বাপের বাড়িতে ছিলেন। উদ্বিগ্ন স্বামী তাকে দেখভালের জন্য অফিস থেকে ছুটিও নিয়েছিলেন। কিন্তু স্ত্রী প্রেমিকের সঙ্গে ঠিক করে রেখেছিল, যে দিন প্রথম বাড়ির বাইরে পা রাখবে, সে দিনই খুন হবেন স্বামী। হলও তেমনই।

শুক্রবার বারাসতের হৃদয়পুরে অনুপম সিংহ খুনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করতে গিয়ে এমনই সব তথ্য পেল পুলিশ। এ দিন অনুপমের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর স্ত্রী, মনুয়া মজুমদারের প্রেমিক অজিত রায়কে। পুলিশকে অজিত জানিয়েছে, টানা ছুটির পরে ৩ মে প্রথম বারাসত পুরসভায় কাজে যায় মনুয়া। এর পরেই দেখা করে অজিতের সঙ্গে। অনুপম তখন অফিসে। মনুয়া অনুপমকে ফোন করে জানায়, ‘আজ আমাদের বাড়ি আসতে হবে না। তুমি অফিস করে তাড়াতাড়ি হৃদয়পুরের বাড়ি ঢুকে যেও।’

এর পরে অজিতকে নিয়ে হৃদয়পুরে অনুপমের বাড়ি যায় মনুয়া। তালা খুলে মনুয়া ও অজিত ঘণ্টা দুয়েক কাটায় সেখানে। অনুপম যখন জানান কলকাতার অফিস থেকে বেরিয়েছেন, তখনই হৃদয়পুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে মনুয়া। অজিতকে ঘরে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় সে। ঘরের আলো নিভিয়ে অন্ধকারে অনুপমের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে অজিত। উত্তেজনায় ঘন ঘন সিগারেট খায় সে। অনুপম কখন স্টেশনে নামছেন, কখন বাড়ি যাচ্ছেন— ফোনে সব তথ্যই দিতে থাকে প্রেমিককে। ওই ঘর থেকে পোড়া সিগারেটের টুকরোর মতো কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: খুশি, তবু আরও নেতা গ্রেফতারের আশঙ্কা মমতার

উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এ দিন জানান, জেরায় মনুয়া বলেছে, সে ও অজিত ঠিক করেছিল সুস্থ হয়ে যে দিন প্রথম বাড়ি থেকে বেরোবে, সে দিনই খুন করা হবে অনুপমকে। খুনের পরদিন দক্ষিণেশ্বরে পুজোও দেয় স্ত্রী। প্রেমিককে বলে, ‘সব কিছু ঠিকঠাক মিটেছে, তাই পুজো!’ পুলিশকে অবশ্য মনুয়া জানিয়েছে, ‘‘মনে হয়েছিল বড় পাপ হয়ে গিয়েছে, তাই।’’

পুলিশ জেনেছে, অনুপম ফোনে মনুয়াকে জানিয়েছিলেন, ‘বাড়ি ঢুকছি।’ মনুয়া তাঁকে বলে, ‘‘ওকে, ফ্রেশ হয়ে পরে ফোন কোরো।’’ তখনই অজিতকে ফোন করে মনুয়া বলে, ‘‘ঘরে ঢুকছে, রেডি তো? ফোন কাটবে না। কী হচ্ছে সব শুনব।’’ সেইমতো পকেটে ফোন চালু রেখেই লোহার রড এবং ছুরি দিয়ে খুন করা হয় অনুপমকে। অজিত বেরোতেই মনুয়া বলে, ‘‘তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। এই বাড়ি চলে এসো। তবে ঘরে এসো না। কেউ সন্দেহ করতে পারে।’’

একটি টোটো নিয়ে মনুয়ার বাপের বাড়িতে যায় অজিত। ছাদ থেকে হাত নাড়ে মনুয়া। পরে বারাসত স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে অশোকনগরে বাড়ি চলে যায় সে। পুলিশের অতিরিক্ত সুপার অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুবই ঠান্ডা মাথায় সব কিছু করা হয়েছে। এখনও তেমনই নির্লিপ্ত মনুয়া।’’

ঘরে কোথায় লুকিয়ে ছিল সে? কী ভাবে খুন করা হয়েছে? পুলিশকে এ দিন সবটাই দেখিয়েছে অজিত। তবে মনুয়াকে এ দিন ওই বাড়িতে নিয়ে যায়নি পুলিশ। অজিতকে গোপনে নিয়ে যাওয়া হলেও খবর রটে যায়। স্থানীয়েরা জড়ো হয়ে অজিতকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। কোনও মতে জনতার ক্ষোভ থেকে বার করে আনা হয় তাকে।

Murder Love Love triangle Boyfriend Girlfriend
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy