Advertisement
E-Paper

‘ওঁর পাগলামি দেখে ক্লান্ত’! গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরানো নিয়ে রাজ্যপালকে কটাক্ষ ব্রাত্যের

গত বছরের অগস্ট মাসে রজতকিশোর দে-কে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকারী উপাচার্যের পদে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য। তার পর থেকে তিনি ওই পদেই বহাল ছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৫৮
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র ।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকারী উপাচার্যকে পদ থেকে সরানো নিয়ে আবার প্রকাশ্যে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যপাল ‘পাগলামি’ করছেন বলেও কটাক্ষ করেছেন ব্রাত্য।

গত বছরের অগস্ট মাসে রজতকিশোর দে-কে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকারী উপাচার্যের পদে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য। তার পর থেকে তিনি ওই পদেই বহাল ছিলেন। কিন্তু রবিবার রাজ্যপালের তরফে একটি চিঠি পাঠিয়ে রজতকিশোরকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের ন’মাসের মাথায় তাঁকে পদ থেকে সরানো হল। কিন্তু কেন তাঁকে পদ থেকে সরানো হল, তা ওই চিঠি থেকে স্পষ্ট নয়। যদিও তৃণমূলের দাবি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সাম্প্রতিক কনভেনশনের জেরেই রজতকিশোরকে সরানো হয়েছে। যদিও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ও রকম কোনও চিঠি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছয়নি। এই নিয়ে রজতকিশোরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু তাঁর ফোন ‘সুইচড অফ’।

সম্প্রতি তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সভা বসেছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সভাপতি হিসাবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ঘটনাচক্রে সেই সভার পরে পরেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে অপসারিত হলেন রজতকিশোর। আর তার পরেই সোমবার রাজ্যপালের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ‘এবিপি আনন্দ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রাত্য বলেন, ‘‘এই লোকটার (রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস) পাগলামি এবং বোকামি দেখতে দেখতে রাজ্যবাসী ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। দু’দিন আগে উত্তরবঙ্গে আমাদের রাজ্য অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার কনভেনশন হয়। সেখানে কার্যকারী উপাচার্য উপস্থিতও ছিলেন না। কিন্তু রাজ্যপালের গোসা হয়েছে। সেই কারণেই নির্বাচনী বিধিনষেধ না মেনে এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উড়িয়ে দিয়ে রবিবার মধ্যরাতে ওই উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়ে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।’’ যদিও ব্রাত্যের এই মন্তব্যের ভিত্তিতে রাজভবনের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকেও পদ থেকে সরিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। সেই সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। যে দিন সমাবর্তন হওয়ার কথা ছিল, তার ঠিক আগের সন্ধ্যায় সরানো হয় বুদ্ধদেবকে। এ বার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকারী উপাচার্যকেও পদ থেকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল।

উপচার্য নিয়োগ নিয়ে গত বছর প্রকাশ্যে এসেছিল রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। উপাচার্য নেই , এ রকম একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকরী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল বোস। উত্তরবঙ্গ, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট), কলকাতা, কল্যাণী, বর্ধমান, কাজী নজরুল, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন আচার্য বোস। তবে ওই উপাচার্যদের বেতন বন্ধ করে দেয় শিক্ষা দফতর। রাজ্যের যুক্তি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না আচার্য। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নিয়ম মেনে ওই নিয়োগ করা হয়নি। এই নিয়োগ নিয়ে মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy