Advertisement
E-Paper

বাজি ‘পরম্পরা’, বন্ধে রাজি নন মন্ত্রী

পরিবেশবিদদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, আতসবাজির ধোঁয়া বাতাসে বিষের মাত্রা বাড়ায়। তাই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ মনে করে, মানুষের কথা ভেবে আতসবাজি নিষিদ্ধ করা উচিত। কিন্তু পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাফ কথা, ‘‘পরম্পরা বলে একটা কথা আছে। দীপাবলির সময় ফুলঝুরি, রংমশাল, চরকির মতো বাজি পোড়ানো বাংলার সংস্কৃতি, পরম্পরা। এটা বন্ধ করা যায় না!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৫
উৎসারিত: আতসবাজি পুড়িয়ে কালীপুজোর উদ্বোধনে মেয়র। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

উৎসারিত: আতসবাজি পুড়িয়ে কালীপুজোর উদ্বোধনে মেয়র। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

বিজ্ঞান বনাম ‘পরম্পরা’। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বনাম পরিবেশমন্ত্রী।

আতসবাজি বন্ধ করা নিয়ে এমনই আড়াআড়ি ভাগ হয়েছে রাজ্যে!

পরিবেশবিদদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, আতসবাজির ধোঁয়া বাতাসে বিষের মাত্রা বাড়ায়। তাই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ মনে করে, মানুষের কথা ভেবে আতসবাজি নিষিদ্ধ করা উচিত। কিন্তু পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাফ কথা, ‘‘পরম্পরা বলে একটা কথা আছে। দীপাবলির সময় ফুলঝুরি, রংমশাল, চরকির মতো বাজি পোড়ানো বাংলার সংস্কৃতি, পরম্পরা। এটা বন্ধ করা যায় না!’’

আরও পড়ুন: চিকিৎসা ফেরাবেন না,বুদ্ধের বাড়িতে মমতা

মন্ত্রীর এই কথা শুনে বিস্মিত পরিবেশকর্মীদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, পরম্পরার যুক্তিতে বিজ্ঞানকে অস্বীকার করা যায় না। দিল্লি, মুম্বই পারলে এ রাজ্য কেন পারবে না? রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, পরম্পরা বলে কোনও ক্ষতিকর জিনিস চলতে পারে না। মানুষের কল্যাণেই পরম্পরা বদলায়। আর এক পরিবেশকর্মী বলছেন, ‘‘বাল্যবিবাহের পরম্পরা বদলাতে মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী। সেটাকেও কি শোভনবাবু অস্বীকার করবেন?’’

পরিবেশ দফতরের খবর, এ দিন বাজি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আগে বৈঠকে বসেছিলেন মন্ত্রী ও অন্যান্য কর্তা। সেখানে এক পরিবেশবিদ আতসবাজি কী ভাবে বায়ুদূষণ ঘটায় তা মন্ত্রীকে বোঝান। কিন্তু শোভনবাবু কোনও যুক্তিতে আমল দেননি।

এ দিন কলকাতা পুরভবনে মন্ত্রী প্রথমেই জানিয়ে দেন, দিল্লি, মুম্বইয়ে বাজি নিয়ে যে নির্দেশ হয়েছে কলকাতা তার মধ্যে পড়ে না। তবে ৯০ ডেসিবেলের উপরে শব্দবাজি নিষিদ্ধ। অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিদেশিরা শহরে রয়েছেন। তাই সল্টলেক ও তার আশপাশের এলাকায় বাজি পো়ড়ানোয় নিয়ন্ত্রণ রাখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রীর যুক্তি, সেখানে বাতাস বিষিয়ে গেলে বিদেশিদের কষ্ট হবে। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে— মন্ত্রী বিদেশিদের কষ্টে বিচলিত হচ্ছেন, কিন্তু রাজ্যবাসীর কষ্টে কেন উদাসীন?

চিনা বাজির বিপদ নিয়েও মন্ত্রী যে ভাবলেশহীন, সেটা এ দিন কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করলে বন্ধ করব কোন আইনে?’’ তাঁর দাবি, শব্দবাজির উদ্দামতা কমেছে। রাত দশটার পরে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশকর্মীরা অবশ্য বলছেন, ফি বছর এই বার্তাই সার। কালীপুজো-দেওয়ালির রাতে লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।

এ বারও কি তাই হবে? মন্ত্রীর জবাব, ‘‘সেটা পুলিশ দেখবে!’’

Sovan Chatterjee Firecrackers Pollution শোভন চট্টোপাধ্যায় দূষণ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy