• কোলে বাচ্চা নিয়ে মহিলা বাসের পা-দানিতে পা দিতে না-দিতেই ঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন কন্ডাক্টর। টাল সামলাতে না-পেরে হুমড়ি খেলেন মা। কোল থেকে বাচ্চা ছিটকেই পড়ত, কোনও ক্রমে ধরে ফেললেন এক সহযাত্রী।
• সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত তরুণীর বাস থেকে নামতে একটু সময় লাগায় ঝাঁঝিয়ে উঠলেন চালক, ‘‘হাঁটতে পারেন না তো বাসে ওঠেন কেন! বাড়ির লোক আপনাদের ছাড়েই বা কী করে? যত্ত সব ঝামেলা!’’
• বাসে ‘সিনিয়র সিটিজেন’ লেখা আসনে দিব্যি গ্যাঁট হয়ে বসে রয়েছেন কয়েক জন শক্তসমর্থ অফিসযাত্রী। বয়স্ক যাত্রীকে দেখেও আসন ছাড়ার নাম নেই। প্রবীণ মানুষটি বসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য কন্ডাক্টরকে অনুরোধ করলেন। কন্ডাক্টর ঝাঁঝিয়ে বললেন, ‘‘নিজে ব্যবস্থা করে নিন।’’
• বগলে ক্রাচ নিয়ে প্রতিবন্ধী মানুষটি তখনও ঠিক করে রাস্তায় পা দিতে পারেননি। ভ্রুক্ষেপ না-করে ছেড়ে দিল বাস। ফুটপাথে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন যাত্রীটি। আর একটু হলেই পিষে দিচ্ছিল বাসের পিছনের চাকা।
বাসের এক শ্রেণির কর্মী যে হামেশাই এই ধরনের আচরণ করেন, বাস পরিচালকেরাও তা জানেন। যাত্রীদের সঙ্গে, বিশেষত অশক্ত যাত্রীদের সঙ্গে বাসের কন্ডাক্টর ও চালকেরা যাতে আরও একটু মানবিক আচরণ করেন, সেই জন্য ব্যাপক হারে প্রচারাভিযান চালানো হবে বলে জানাল জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস। পশ্চিমবঙ্গে বাস-মালিকদের বৃহত্তম এই সংগঠনের সাধারণ সচিব তপন বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা অনেক সময় এমন ব্যবহার করে ফেলেন, যার জন্য মানুষ আমাদের অমানুষ মনে করেন। এটা চলতে পারে না।’’ তপনবাবু জানান, বাসকর্মীদেরও যে একটা সামাজিক দায়িত্ব আছে, সেই ব্যাপারে তাঁরা এ বার প্রচার-অভিযান শুরু করছেন। প্রচারে তাঁরা বাসচালক ও কন্ডাক্টরদের বলবেন, দায়িত্বশীল হতে হবে। ভাল ব্যবহার করতে হবে যাত্রীদের সঙ্গে।
সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সেরিব্রাল পলসির প্রতিনিধিরাও। সিন্ডিকেটের কর্তারা জানান, বাসের চালক-কন্ডাক্টরদের বিশেষ করে প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী, বৃদ্ধবৃদ্ধা, শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে বলা হচ্ছে। বাসের পা-দানি নিচু করা, হুইলচেয়ারে ওঠানো-নামানোর জন্য র্যাম্পের ব্যবস্থা করার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy