বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে ‘নসিহত’ করা (পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা) হয়েছে বলে দাবি করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তৌহিদ বুধবার বলেন, ‘‘নির্বাচন নিয়ে কোনও উপদেশ চাইছে না বাংলাদেশ।’’
বুধবার বিকেলে বিদেশ মন্ত্রকে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে তৌহিদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, এটা নিয়ে আমরা প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না। এখন সামনে আমরা একটা ভাল নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে তো আমাদের নসিহত করার তো কোনও প্রয়োজন নেই।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারত আমাদের এটা (নির্বাচন) নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। একে আমি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে করি। তারা (ভারত) জানে এর আগে গত ১৫ বছর যে সরকার ছিল, তাদের সঙ্গে (ভারতের) অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। ওই সময় নির্বাচনগুলো যে প্রহসনমূলক হয়েছিল, সে সময় তারা (ভারত) একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি।’’
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, বুধবার সকালে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করেছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতা হাসনাত আবদুল্লার ভারতবিরোধী বক্তৃতার প্রেক্ষিতে এই তলব। তিনি তাঁর বক্তৃতায় ‘সেভেন সিস্টার্স’কে ভারতের মানচিত্র থেকে আলাদা করে দেওয়ার আহ্বান করেন। শুধু তা-ই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেবে বাংলাদেশ, এমনও বলেন। তার পরেই ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই প্রক্ষিতে রিয়াজকে তলব করা হয়।
ঘটনাচক্রে দিন কয়েক আগে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মাকে তলব করেছিল বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে বার্তা দেওয়া হয়েছিল ভারতকে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন একই সঙ্গে হবে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটও। নির্বাচন ঘোষণার পরই বাংলাদেশে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ওসমান হাদি। তার পর থেকে বিভিন্ন নেতাদের মুখে ভারতবিরোধী বক্তৃতাও শোনা যায়। সেই আবহে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভোটের আগে অশান্তি আরও বাড়তে পারে বলে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস কর্তৃপক্ষও সম্প্রতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।