তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলের সামনে অবস্থানে বসলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বোনেরা। বিক্ষোভ দেখালেন পিটিআই-এর কর্মী ও সমর্থকেরাও। সব মিলিয়ে বুধবারও ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল আদিয়ালা জেলের বাইরে। বিক্ষোভকারীদের সরাতে বাধ্য হয়ে শেষমেশ জলকামান ছুড়ল পুলিশ।
মঙ্গলবার ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে আদিয়ালা জেলে গিয়েছিলেন প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রনেতার তিন বোন। সঙ্গে ছিলেন পিটিআই নেতা তথা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মহম্মদ সোহেল আফ্রিদি। ছিলেন পিটিআইয়ের অন্য তাবড় নেতারাও। কিন্তু বিকেল ৪টে নাগাদ জেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়ে দেন, পরিবার, সমর্থক কিংবা আইনজীবী— কারও সঙ্গেই দেখা করতে দেওয়া হবে না ইমরানকে। এর পরেই অশান্ত হয়ে ওঠে জেলের বাইরের পরিস্থিতি। বুধবার আদিয়ালা কারাগারের বাইরে অবস্থানে বসেন ইমরানের বোন আলেমা, নৌরীন এবং উজ়মা খান। আলেমার কথায়, ‘‘আমরা তো কোনও অবৈধ বা অসাংবিধানিক কাজ করছি না। যদি প্রতি সপ্তাহে আমাদের এ ভাবে বাধা দেওয়া হয়, তা হলে প্রতিবাদ করা ছাড়া আমাদের আর কী উপায় রয়েছে? আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসে আছি। আজ আমরা কম্বলও সঙ্গে নিয়ে এসেছি!’’
এর পর থেকেই আদিয়ালা কারাগারের বাইরে কড়া নিরাপত্তা বসিয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশকর্মীও মোতায়েন করা হয়েছে। জেলের পাঁচ নম্বর গেটের বাইরে বসানো হয়েছে জলকামান। গোরক্ষপুর এবং কারখানা চেকপোস্ট-সহ একাধিক প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। আশপাশের এলাকার বাজার ও পেট্রোল পাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে। কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও বুধবার জেলের কাছে ভিড় জমাতে শুরু করেন দলে দলে পিটিআই কর্মী। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শেষমেষ জলকামান ছোড়ে পুলিশ। এ নিয়ে নৌরীন বলেন, ‘‘আমরা সন্ত্রাসবাদী নই। পিটিআই একটি শান্তিপূর্ণ দল। তবুও আমাদের উপর জলকামান ব্যবহার করা হল। বহু মানুষ আহত হল। পঞ্জাব পুলিশ সন্ত্রাসী বাহিনীর মতো আচরণ করছে।’’
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের অগস্ট মাস থেকে রওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ইমরান। কিন্তু অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বার বার ইমরানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও কারা কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দিচ্ছেন না। গত মাসে জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন। তাঁদের হটাতে সে বারেও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। যদিও পরে জেলে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন তাঁর বোন উজ়মা। দাদার সঙ্গে দেখা করার পর জেল থেকে বেরিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন উজ়মা। তিনি জানান, ইমরান এখন শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু তাঁকে নির্জন কারাগারে বন্দি করে রেখে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পাক সেনা সর্বাধিনায়ক ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে নিশানা করে উজ়মা আরও বলেন, ‘‘সব কিছুর জন্য উনিই দায়ী।’’