Advertisement
০২ মে ২০২৪
CAA

‘ডিগবাজি’ খেলেন শান্তনু! ‘এক সপ্তাহের মধ্যে সিএএ’ দাবিকে বললেন ‘স্লিপ অফ টাং’, পাল্টা কুণালও

এক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হবে বলে যে দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু, শনিবার তাকেই ‘স্লিপ অফ টাং’ বললেন তিনি।

(বাঁ দিকে) শান্তনু ঠাকুর এবং কুণাল ঘোষ।

(বাঁ দিকে) শান্তনু ঠাকুর এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৩
Share: Save:

‘ডিগবাজি’ খেলেন শান্তনু ঠাকুর। এক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হবে বলে যে দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু, শনিবার তাকেই ‘স্লিপ অফ টাং’ বললেন তিনি। বললেন, ‘‘মুখ ফস্কে বলে ফেলেছি।’’ এ নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওটা স্লিপ অফ টাং নয়। মিথ্যা বলতে বলতে এ ভাবে এক দিন জিভটাই খসে পড়বে।’’

গত রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির নিশ্চিন্তপুরে সভায় গিয়েছিলেন শান্তনু। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা ১৯৭১ সালের পরে এসেছেন (এ দেশে), তাঁদের নাগরিকত্ব দরকার। কারণ, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে হবে। বিজেপি সরকার সিএএ চালু করলে আর কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই, আমাদের যখন খুশি ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ চালু করবে।’’ এই মন্তব্যের ছ’দিনের মাথায় নিজের দাবি থেকে সরে এলেন শান্তনু। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে রুল ফ্রেম (নীতি প্রণয়ন) সম্পন্ন হবে বলতে গিয়ে মুখ ফস্কে গিয়েছিল।’’

শনিবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানা এলাকার কুঠিবাড়িতে মতুয়া মহাসঙ্ঘের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন শান্তনু। সেখানে সিএএ-র প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাষণ দেন তিনি। আবার ‘গ্যারান্টি’ দিয়ে বলেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই সিএএ চালু হবে। এটা ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব বরাবরই সিএএ প্রসঙ্গে দাবি করে আসছেন, যে নাগরিকেরা ভোট দেন, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে, তাঁরাই এ দেশের নাগরিক। শান্তনুর প্রশ্ন, যাঁরাই এ দেশে এসেছেন, ভোট দেন, আধার কার্ড আছে— তাঁরাই যদি নাগরিক হন তা হলে পাসপোর্টের তদন্তের জন্য ডিআইবি কেন ১৯৭১ সালের আগের দলিল চাইছে?

শান্তনু ‘ডেডলাইন’ মন্তব্যের পরেই সুর চড়িয়েছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখন ক্যা-ক্যা করে চিৎকার করছে। এটা ফ্যা-ফ্যা ভোটের রাজনীতি করার জন্য। আপনারা সবাই নাগরিক। আপনাদের সবাইকে নাগরিক হিসাবে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিকে স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে দিয়েছি। তারা সবাই রেশন পায়, স্কুলে যায়, স্কলারশিপ পায়, কিসান বন্ধু পায়, শিক্ষাশ্রী পায়, ঐক্যশ্রী পায়, লক্ষ্ণীর ভান্ডার পায়। সে নাগরিক না হলে থোড়াই এ সব পেত। নাগরিক না হলে তারা ভোট দিতে পারত?’’ রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও বলেন, ‘‘আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, সিএএ অবশ্যই হবে। তাঁর নাকি আত্মবিশ্বাস আছে। আসলে তাঁরই আত্মবিশ্বাস নেই।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, সিএএ-র প্রয়োজন নেই। সিএএ বাংলায় হবে না। যাঁদেরকে ওঁরা নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই দেশের নাগরিক। তাঁরা রেশন পাচ্ছেন, ভোট দিচ্ছেন, সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছেন। সুখে আছেন, শান্তিতে আছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। প্রতি বার নির্বাচন এলেই যদি আপনি মনে করেন, সিএএ তুলে আলোড়ন তৈরি করবেন, অরাজকতা তৈরি করবেন, সেটা আর হবে না। বাংলার মানুষ এ সবে আর বিশ্বাস করবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CAA TMC Shantanu Thakur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE