ধর্ষণ, জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে নাম জড়িয়েছে স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ ওরফে কার্তিক মহারাজের! সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কার্তিক মহারাজকে তলব করা হয়। যদিও তিনি থানায় হাজিরা না-দিয়ে দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের। তাঁর দায়ের করা মামলায় সময় চাইল রাজ্য। বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল মামলায় সময় চেয়ে আবেদন করেন। তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বৃহস্পতিবার সকালে মামলাকারীর আইনজীবীকে ফের বিষয়টি হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বললেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবারই শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
এফআইআর খারিজের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবারই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন কার্তিক মহারাজ। তাঁর পক্ষের আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী আদালতে জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। মামলা করার অনুমতি দেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। বুধবার শুনানির কথা থাকলেও রাজ্যের এজি এই মামলায় সময় চান। বিচারপতি সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবীকে বৃহস্পতিবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলেন। মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে কার্তিক মহারাজের রক্ষাকবচের কথা বলেন। রাজ্য জানায়, যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। রাজ্যের বক্তব্যের পর বিচারপতি জানান, এখন তিনি এই বিষয়ে কিছু জানাচ্ছেন না। এ ছাড়াও, সব পক্ষের বক্তব্যের জানতে চেয়ে হলফনামা জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি।
গত ২৮ জুন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নবগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন এক মহিলা। অভিযোগকারিণীর দাবি অনুযায়ী, ২০১৩ সালে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানা এলাকার চাণক্য অঞ্চলে এক আশ্রমের প্রাইমারি স্কুলে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে শিক্ষিকার পদে নিয়োগ করা হয়। স্কুলে থাকার জন্য তাঁকে একটি ঘরও দেওয়া হয়েছিল। সেখানে নাকি এক রাতে আচমকাই মহারাজ হাজির হয়েছিলেন। তাঁকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে তা মেনে নিতে হয় বলে জানান অভিযোগকারিণী। তাঁর আরও অভিযোগ, তার পর দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। এমনকি, তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়লে জোর করে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়।
আরও পড়ুন:
মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে নবগ্রাম থানার পুলিশ। সোমবার নবগ্রাম থানার পুলিশ বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অফিসে গিয়ে হাজিরার নোটিস দিয়ে আসে। বলা হয়, এই অভিযোগের ভিত্তিতে কার্তিক মহারাজকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। সেই কারণেই মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ থানায় তাঁকে আসতে বলা হয়েছিল। যদিও কার্তিক মহারাজ হাজিরা না দিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।