E-Paper

বিড়াল নিয়ে বধূ নির্যাতনের মামলা খারিজ হাই কোর্টে

আদালতের খবর, বাড়িতে প্রায় ৪০টি বিড়াল ছিল বৃদ্ধার এবং তাদের নিজের সন্তানসম ভালবাসতেন তিনি। সেই বিড়ালদের বাড়িতে রাখা নিয়ে গোলমাল হয় অশীতিপর দম্পতির মধ্যে। সেই বিবাদের জেরেই স্বামীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের (৪৯৮এ) ধারায় মামলা করেন ৮৪ বছর বয়সি বৃদ্ধা স্ত্রী।

সব্যসাচী ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৫
কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অশীতিপর বৃদ্ধের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। কোর্টের খবর, অশীতিপর স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িতে বিড়াল পোষা নিয়ে গোলমাল বাধে বৃদ্ধের। সেই ঝামেলা থানা, নিম্ন আদালত হয়ে গড়ায় হাই কোর্টে। অবশেষে হাই কোর্ট থেকে নিষ্কৃতি পেলেন বৃদ্ধ। তাঁর বিরুদ্ধে থাকা বধূ নির্যাতনের মামলা খারিজ করেছেন বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাস। তাঁর নির্দেশ, পুলিশ নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা দিলেও বিচার হবে না বৃদ্ধের বিরুদ্ধে মামলার। উল্লেখ্য, মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। মামলা খারিজের পাশাপাশি বিচারপতির আরও নির্দেশ, বাড়িতে এখনও থাকা পোষ্য বিড়ালদের প্রতি কোনও ভাবেই নিষ্ঠুর আচরণ করতে পারবেন না ওই বৃদ্ধ।

আদালতের খবর, বাড়িতে প্রায় ৪০টি বিড়াল ছিল বৃদ্ধার এবং তাদের নিজের সন্তানসম ভালবাসতেন তিনি। সেই বিড়ালদের বাড়িতে রাখা নিয়ে গোলমাল হয় অশীতিপর দম্পতির মধ্যে। সেই বিবাদের জেরেই স্বামীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের (৪৯৮এ) ধারায় মামলা করেন ৮৪ বছর বয়সি বৃদ্ধা স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, তাঁকে এবং তাঁর কনিষ্ঠ সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বৃদ্ধ। এর পাশাপাশি স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও করেছিলেন বৃদ্ধা। সেই মামলায় নিম্ন আদালতে চার্জশিট দেয় কল্যাণী থানার পুলিশ। নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়া এবং দায়ের হওয়া মামলা বাতিলের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ৮৫ বছরের বৃদ্ধ। তাঁর আইনজীবী শিবাজীকুমার দাস দাবি করেন, ছেলের ভুল পরামর্শের শিকার হয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। পোষ্য নিয়ে বিবাদের জেরে বধূ নির্যাতনের ভুয়ো মামলা দায়ের হয় তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে। রাজ্যের কৌঁসুলি জানান, তদন্তে নির্যাতনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন অভিযোগকারিণী বৃদ্ধা।

উভয় পক্ষের বক্তব্য এবং তথ্যপ্রমাণ বিবেচনা করে বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসের পর্যবেক্ষণ, বাড়িতে বিড়াল রাখা নিয়ে গোলমাল হলেও মূলত বিবাদ রয়েছে সন্তান ও বাবার মধ্যে। সেই সংক্রান্ত পৃথক মামলাও বিচারাধীন। সাক্ষীর বয়ান অনুযায়ী, পোষ্য নিয়ে বিবাদ থাকলেও দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে কখনও স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও নির্যাতনের অভিযোগ করেননি বৃদ্ধা। অভিযোগকারিণী বৃদ্ধা মারা যাওয়ায় অযথা বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বৃদ্ধকে। সেই সব বিষয় বিবেচনা করে নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া বাতিল করা হল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court torture

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy