কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
অবসরের দিন কুড়ি আগে সরকারি চিঠি পেয়েছিলেন পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষক সমর চট্টোপাধ্যায়। তাতে বলা হয়েছিল, চাকরিজীবনে বেতন বাবদ ১৪ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত পেয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা ফেরত দিতে হবে। শুধু টাকা ফেরত দিয়েই সমস্যা মেটেনি। বেতন বৃদ্ধির হার কমানোর ফলে পেনশনের পরিমাণও কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত রায় দিয়েছেন, ৮ সপ্তাহের মধ্যে ওই শিক্ষককে ৮ শতাংশ সুদ-সহ ১৪ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। পেনশনের হিসাবও শুধরোতে হবে এবং এই কয়েক বছরের মধ্যে পেনশন খাতে সমর যে পরিমাণ টাকা কম পেয়েছেন তাও মিটিয়ে দিতে হবে।
সমরের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, তাঁর মক্কেল ১৯৯৬ সালে বেলঘরিয়ার একটি পলিটেকনিক কলেজে লেকচারার পদে যোগ দেন। এর পরে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তিনি কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিম অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা পেয়েছিলেন। ২০১৩ সালে অবসরের দিন কুড়ি আগে কারিগরি শিক্ষা দফতর চিঠি দিয়ে জানায় যে বেতন বৃদ্ধির হিসাবে অসঙ্গতির জন্য তিনি সরকারের থেকে ১৪ লক্ষ টাকা বেশি পেয়েছেন। সেই টাকা ফেরত দিতে হবে। আদালতে এক্রামুলের যুক্তি ছিল, এই বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমরের কোনও ভূমিকা ছিল না। তাই এর দায় তাঁর হতে পারে না। যদিও সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে সমরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সেই নিরিখে তিনি টাকা বেশি পেয়েছেন। গ্রাচুইটি, পেনশন খাত থেকে ওই টাকা কেটে নেওয়ার জন্য লিখিত মুচলেকা দিয়েছিলেন সমর।
সমর জানান, টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হওয়ায় এবং পেনশন কমিয়ে দেওয়ায় ক্যানসার আক্রান্ত ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে নাজেহাল হয়েছেন তিনি। আর্থিক দিক থেকেও প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শেষমেশ এই রায় পেলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না তিনি। রাজ্য সরকার রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। বলছেন, ‘‘টাকা হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy