কামারহাটির তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত সেই জয়ন্ত সিংহের ‘বেআইনি’ বাড়ি ভাঙতে আরও বেশি সময় চাইতে গিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের ধমক খেল পুরসভা। উচ্চ আদালত বলল, ‘‘আগে কিছু তো পদক্ষেপ করুন। তার পর সময় চাইবেন। অন্তত দুটো তলা ভেঙে আসুন।’’
সম্প্রতি জয়ন্ত ওরফে ‘জায়ান্ট’-এর বেআইনি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত নির্দেশ দিয়েছিলেন, আট সপ্তাহের মধ্যে পুর প্রশাসনকে ওই বাড়ি ভাঙতে হবে। এর পরেই বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে পুরসভা জানায়, জয়ন্তের বাড়িটি অনেক বড়। সেটি ভাঙতে আরও কিছুটা সময় চাই।
পুরসভার ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, ‘‘আগে আপনারা দেখান যে, আপনারা অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে উদ্যোগী হয়েছেন। তার পর বলুন বাড়ি ভাঙতে আরও দু’সপ্তাহ বেশি সময় লাগবে। দুটো তলা ভেঙে এসে সময়বৃদ্ধির আবেদন করবেন।’’
আদালতের এই নির্দেশের পর কামারহাটি পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশমতোই পুরসভা কাজ করবে। অত বড় বাড়ি ভাঙার পরিকাঠামো পুরসভার নেই। টেন্ডার ডেকে বাড়ি ভাঙার বরাত দিতে হবে কোনও সংস্থাকে। কিন্তু এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকুন যে, আদালতের নির্দেশ মেনেই পুরসভা কাজ করবে। সেটা দ্রুত গতিতেই হবে।’’
প্রসঙ্গত, গত বছর এক ব্যক্তিকে স্থানীয় একটি ক্লাবে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল জয়ন্তের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরেই জয়ন্তের একের পর এক ‘কীর্তি’ জানাজানি হয়। তার মধ্যে স্থানীয় মানুষদের উপরে নানা রকম ভাবে নিপীড়নের অভিযোগ যেমন ছিল, তেমনই বেআইনি ভাবে একটি প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি নিয়েও অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগ ছিল, একটি ডোবা ভরাট করে ওই প্রাসাদোপম বাড়িটি তৈরি হয়েছে। দিনের আলোয় বেআইনি নির্মাণ হলেও কামারহাটি পুরসভা কেন পদক্ষেপ করেনি, তা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। আদালতের খবর, বিভিন্ন চাপের মুখে পড়ে জয়ন্তকে শেষমেশ গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, শাসকদলের নেতা এবং ‘প্রভাবশালীদের’ ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত জয়ন্তের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসন নড়ে বসতেই ওই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুরসভা। সূত্রের দাবি, পুর তদন্তেও বেআইনি নির্মাণের কথা জানা গিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট জমিটির মালিকানা জয়ন্তের কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল পুর তদন্তে। বেআইনি নির্মাণ নিয়ে জয়ন্তকে নোটিসও পাঠিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ।