Advertisement
E-Paper

ঘেরাওয়ে ক্ষতি কত, বোঝাবেন নয়া উপাচার্য

ক্ষমতা থাকলে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘেরাও নিষিদ্ধই করে দিতেন, বলেছিলেন বিদায়ী অস্থায়ী উপাচার্য। নতুন অস্থায়ী উপাচার্য জানালেন, নিষিদ্ধ করাটা ঘেরাও-সমস্যার সমাধান নয়। ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়েই এই ব্যাপারে সুরাহা মিলতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩০
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরে আশুতোষ ঘোষ। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরে আশুতোষ ঘোষ। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

ক্ষমতা থাকলে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘেরাও নিষিদ্ধই করে দিতেন, বলেছিলেন বিদায়ী অস্থায়ী উপাচার্য।

নতুন অস্থায়ী উপাচার্য জানালেন, নিষিদ্ধ করাটা ঘেরাও-সমস্যার সমাধান নয়। ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়েই এই ব্যাপারে সুরাহা মিলতে পারে।

শুক্রবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিজ্ঞান বিভাগের ডিন আশুতোষ ঘোষ বললেন, ‘‘নিষিদ্ধ করে কোনও প্রবণতা আটকানো খুব মুশকিল। আমি অন্তত চেষ্টা করব পড়ুয়াদের বোঝানোর।’’

কী ভাবে বোঝাবেন পড়ুয়াদের?

‘‘কেন ঘেরাও এবং ঘেরাওয়ের ফলে তাঁদের প্রাপ্তিটা কী হচ্ছে, সেটা জানতে চাইব ছাত্রছাত্রীদের কাছে। জবাব মিললে পড়ুয়াদের অসন্তোষের কারণ জেনে তাঁদের প্রত্যাশার দিকে যদি আমরা নজর দিতে পারি, তা হলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাওয়ের পরিস্থিতি আর তৈরিই হবে না,’’ আশা করছেন নতুন অস্থায়ী উপাচার্য।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দাবি আদায়ে ছাত্রছাত্রীরা যে ঘেরাও-আন্দোলনের পথ নিয়ে থাকেন, তার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন বিদায়ী অস্থায়ী উপাচার্য সুগত মারজিত। দু’দফায় মোট এক বছরের কার্যকালের শেষে, বৃহস্পতিবার বিদায়বেলায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিক্ষোভ-ঘেরাও আসলে সেই সব পড়ুয়ার ক্ষতি করে, যাঁদের একমাত্র লক্ষ্য পড়াশোনা করা। আমার ক্ষমতা থাকলে এই ঘেরাও নিষিদ্ধ করে দিতাম।’’

ঘেরাও-আন্দোলন যে আসলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের পরিবেশেরই পরিপন্থী, তা মেনে নিয়েছেন আশুতোষবাবুও। শুক্রবার সুগতবাবুর জায়গায় নতুন দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘র‌্যাঙ্কিং’-এর ব্যবস্থা আছে। সেই তালিকায় উপরে ওঠার চেষ্টা করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই। এই উপরে ওঠার সিঁড়িগুলির মধ্যে আছে গবেষণা, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ এবং পড়ুয়া-শিক্ষক অনুপাত। ঘেরাওয়ের ফলে এ-সবই ন়ড়বড়ে হয়ে পড়ে।’’ তার উপরে কোথাও লাগাতার ঘেরাওয়ের উৎপাত থাকলে ভাল ছাত্রছাত্রীরা আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান না। এই সবই প্রভাব ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে।

গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের পদে যোগ গিয়ে সুগতবাবু জানিয়েছিলেন, তিনি ‘সরকারের লোক’। আশুতোষবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘সুগত ঠিক কোন পরিপ্রেক্ষিতে ওই কথা বলেছিলেন, সেটা আমি জানি না। তবে আমি সকলকে বলতে চাই, ‘আমি তোমাদেরই লোক’। এক জন সাফাইকর্মী থেকে শুরু করে আধিকারিক, কর্মী, পড়ুয়া— সকলেই যেন মনে করেন, উপাচার্য আমাদের লোক। তাঁরা সকলেই যেন মনে করতে পারেন, আমাদের সমস্যা উনি শুনবেন, মেটানোরও চেষ্টা করবেন।’’

রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকা দেয়। তাই তাঁরা স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারেন বলে বারবার মত প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই বিষয়ে সরাসরি কোনও মতামত না-দিলেও নতুন অস্থায়ী উপাচার্য বলেন, ‘‘যাঁরা টাকা দেন, তাঁদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনও টাকা নিলে কোন কোন খাতে সেই অর্থ ব্যবহৃত হল, সেটা তো জানাতেই হবে। এর মধ্যে স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই।’’

শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচন এড়িয়ে শুধু মনোনীত সদস্য নিয়ে নতুন সিন্ডিকেট গড়ার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ। আবার নতুন সেনেট তৈরি না-হওয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটিও গঠন করতে পারছে না সরকার। এ ব্যাপারে আশুতোষবাবু কী ভাবছেন?

সুরঞ্জন দাস উপাচার্য থাকাকালে বা সুগতবাবুর আমলে যে-সব কাজ শুরু হয়েছে, সেগুলো চালিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য বলে জানান নতুন অস্থায়ী উপাচার্য। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘স্ট্যাটিউট’ বা বিধি তৈরি করা এবং সিন্ডিকেটে নির্বাচিত শিক্ষক-প্রতিনিধি রাখার বিষয়েও সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। আশুতোষবাবুর আশ্বাস, ‘‘সিন্ডিকেট গড়া হয়ে গিয়েছে। তাই সেনেট তৈরি করতে আর কোনও সমস্যা নেই। অগস্টের মধ্যেই সেনেট গঠন সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সার্চ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির নাম পাঠাতে হয়। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সেটা পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’’

VC calcutta university
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy