দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র নিতে পৃথক পোর্টাল তৈরি করল নবান্ন। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ এবং ‘পথশ্রী’ প্রকল্পকে নির্দিষ্ট করে দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে নতুন পোর্টালের বিষয়ে অর্থ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিকে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে এই নতুন পোর্টাল।
বুথে বুথে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সমস্যার কথা শুনতে পুজোর আগে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আড়াই মাস ব্যাপী শিবির করেছিল রাজ্য সরকার। পানীয় জল, আলো, রাস্তা সংস্কার বা নির্বাণ, সেতু সংস্কারের মতো অভাব-অভিযোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। তা সমাধানের জন্য বুথপিছু ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে নবান্ন। এ বার সেই প্রকল্পকে ভোটের আগেই বাস্তবায়িত করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন:
গ্রামসড়ক যোজনার বরাদ্দ বন্ধ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে সরব রাজ্য সরকার। তার পরিবর্তে রাজ্যের কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে ‘পথশ্রী’ প্রকল্প শুরু হয়েছিল আগেই। ভোটের আগে সেই প্রকল্পেই আরও নতুন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারকে বাস্তবায়িত করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই কারণেই নতুন পোর্টালে ‘পথশ্রী’রও দরপত্র গ্রহণ করা হবে। নবান্নের নির্দেশিকাতেই স্পষ্ট, জনমানসে উন্নয়নকে চাক্ষুষ করাতে এই দু’টি প্রকল্পের উপরই জোর দিতে চাইছেন মমতা। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব মনে করেন, রাজ্যের মানুষের মূল দাবি রাস্তা, জল, আলো। কর্মসংস্থান তার পরে। মৌলিক দাবি ওইগুলিই। তাঁদের এ-ও বক্তব্য যে, তিন মেয়াদের সরকারের বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থা বিরোধিতা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তা প্রতিহত করতে পারে স্থানীয় স্তরের উন্নয়ন। সেই সূত্রেই এই দুই প্রকল্প সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে জোর দিতে পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার।
গত মঙ্গলবার নবান্নে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের কাজের খতিয়ান ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ পেশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সে দিনই প্রশাসনের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেন, নির্বাচনের কাজের (এসআইআর-সহ অন্যান্য কাজ) মধ্যেও সাধারণ মানুষের কাজ গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। জেলায় জেলায় আবাস, সড়ক, জলসংযোগ, স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিকাঠামো-সহ চালু কাজের গতি যাতে শ্লথ না হয়, তার জন্য ১৩ জন পর্যবেক্ষকের একটি বাহিনীও গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশিই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই পর্যবেক্ষণের কাজ কেন্দ্রীয় ভাবে তদারকি করতে একটি ‘মনিটরিং টিম’ বা নজরদারি দল তৈরি করা হবে। সেখানে কাকে কাকে রাখা হবে, তা মুখ্যচিবের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিলেন মমতা। তার পরেই এই নতুন পোর্টাল তৈরি করল নবান্ন।