Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ক্যাম্পাস: দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজ

ঐতিহ্য ভূতত্ত্ব চর্চার, সেরা খেলাধুলোতেও

জিওলজি এবং কনজারভেশন বায়োলজি। মফস্‌সলে আপাত-অচেনা এই দু’টি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগই বাকিদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে দুর্গাপুর সরকারি কলেজকে। গোটা রাজ্যে হাতে গোনা প্রতিষ্ঠানে এই দু’টি বিষয় পড়ানো হয়। অথচ দুর্গাপুর সরকারি কলেজে ভূতত্ত্ববিদ্যায় স্নাতকোত্তর চালু হয়েছে ১৯৮৩ সালে। তারও আগে থেকে পড়ানো হত স্নাতক। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একমাত্র এই কলেজে এই বিষয়টি পড়ানো হয়। আর ২০০৭ সাল থেকে স্নাতকোত্তরে পড়ানো হচ্ছে ‘কনজারভেশন বায়োলজি’।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৫ ০১:৪৮
Share: Save:

জিওলজি এবং কনজারভেশন বায়োলজি। মফস্‌সলে আপাত-অচেনা এই দু’টি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগই বাকিদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে দুর্গাপুর সরকারি কলেজকে। গোটা রাজ্যে হাতে গোনা প্রতিষ্ঠানে এই দু’টি বিষয় পড়ানো হয়। অথচ দুর্গাপুর সরকারি কলেজে ভূতত্ত্ববিদ্যায় স্নাতকোত্তর চালু হয়েছে ১৯৮৩ সালে। তারও আগে থেকে পড়ানো হত স্নাতক। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একমাত্র এই কলেজে এই বিষয়টি পড়ানো হয়। আর ২০০৭ সাল থেকে স্নাতকোত্তরে পড়ানো হচ্ছে ‘কনজারভেশন বায়োলজি’।

দুর্গাপুর তখনও পুরসভা নয়, নোটিফায়েড অঞ্চল। তখন জনবসতি পৌনে তিন লক্ষ। এমন একটা সময়েই আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য জেলায় প্রথম সরকারি কলেজ গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। ১৯৬৯ সালের ২২ জানুয়ারি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন রাজ্যপাল ধরমবীর। পরের বছর ১৫ সেপ্টেম্বর কলাবিভাগ দিয়ে তার যাত্রা শুরু করে দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজ। পড়ুয়া ছিলেন ১৬০ জন। প্রায় ৩০ একর জমির উপর গড়ে ওঠে ক্যাম্পাস। এখন অবশ্য বিজ্ঞান-কলা-বাণিজ্য তিনটি বিভাগেই পড়াশোনা হয়। ন্যাকের মূল্যায়নে এই কলেজ পেয়েছে বি প্লাস প্লাস গ্রেড।

কলেজের প্রায় গোড়া থেকেই ভূতত্ত্ববিদ্যার পঠনপাঠন চালু করার ক্ষেত্রে মুখ্য অবদান ছিল প্রথম অধ্যক্ষ প্রদীপকুমার মুখোপাধ্যায়ের। তিনি নিজে ছিলেন ভূতত্ত্ববিদ। অধ্যাপনা করেছেন শিবপুরের তৎকালীন বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজে। নিজের অভিজ্ঞতায় তিনি বুঝেছিলেন, দুর্গাপুর ভূতত্ত্ববিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার জন্য আদর্শ এলাকা। পরে দুর্গাপুরে নতুন সরকারি কলেজ তৈরি হলে তাঁকেই দায়িত্ব দেয় রাজ্য সরকার। গোড়ায় নানা রকম সমস্যা পোহাতে হয়েছে কলেজকে। বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ এলেও ছিল না টেলিফোন। এলাকায় বাসও চলত হাতেগোনা। ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে রীতিমতো সমস্যা হত।

• পড়ুয়া ৪৫০০ স্থায়ী শিক্ষক ৭৪ শূন্যপদ ৩৬টি গ্রন্থাগার ১৮টি

এখন দুর্গাপুর শহরের জনসংখ্যা ৬ লক্ষ ছুঁই ছুঁই। গড়ে উঠেছে নতুন নতুন অনেকগুলো কলেজ। দুর্গাপুর সরকারি কলেজেও পড়ুয়া সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রায় ১৫টি বিষয়ে অনার্স পড়ানো হয়। কয়েকটি বিষয়ে পড়ানো হয় স্নাতকোত্তরও। রয়েছে রসায়নে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ। এই কলেজের কৃতী পড়ুয়াদের অনেকে কর্মসূত্রে বিদেশে রয়েছেন। এখন এই কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে চান কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা রয়েছে আরও। কলেজ কর্তৃপক্ষ চান, গ্রিন ক্যাম্পাস গড়তে। বিস্তৃত জমিতে আধুনিক জৈব কৃষি পদ্ধতিতে চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বৃষ্টির জল ধরে রেখে কাজে লাগানো হবে। গড়া হবে একটি মুক্তমঞ্চও।

পড়াশোনার সঙ্গেই নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান সরকারি এই কলেজের পড়ুয়ারা। কলেজের এনসিসি বিভাগ বেশ পুরনো। তার অধীনে নানা রকম কর্মসূচি হয়। খেলাধুলায় আন্তঃকলেজ ও রাজ্য স্তরে ধারাবাহিক ভাবে সফল ছাত্রছাত্রীরা। বিগত আন্তঃ জেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অ্যাথলেটিক্সে পুরুষ বিভাগে এবং ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্যাডমিন্টনেও আন্তঃকলেজ সেরা।

এই কলেজের সমস্যাও নেহাত কম নয়। একসঙ্গে দু’শো জন বসার মতো কোনও হলঘর নেই। পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নেই। শূন্যপদ দ্রুত পূরণ না হলে ব্যাহত হবে পঠন-পাঠন। শিক্ষাকর্মীর বহু পদ শূন্য। ৫৮ জনের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ২৩ জন। প্রাতঃকালীন বাণিজ্য বিভাগে তো শিক্ষাকর্মীর কোনও পদই নেই। সাময়িক ভিত্তিতে দু’জনকে নিয়ে কাজ সামাল দিতে হচ্ছে। কলেজের খেলার মাঠের সংস্কারও জরুরি।

পড়ুয়াদের হাজিরা সমস্যা নিয়েও নাকাল কর্তৃপক্ষ। ৬০ শতাংশ হাজিরা না থাকলে বার্ষিক পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তার পরেও অন্তত শ’দুয়েক পড়ুয়ার হাজিরা ছিল ২০ শতাংশেরও কম। পরীক্ষায় বসার দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। তবে কর্তৃপক্ষের অবস্থান এ ক্ষেত্রে কড়া। তাঁদের সাফ কথা, কলেজের খাতায় নাম লিখিয়ে দিনের পর দিন ক্লাস না করে কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসা যাবে না।

ছবি তুলেছেন বিকাশ মশান।

কী পড়বেন

কেন পড়বেন

বিষয়: হোটেল ম্যানেজমেন্ট

অভিজিৎ মণ্ডল।

সেক্রেটারি,
ডলফিন স্কুল অব হোটেল ম্যানেজমেন্ট,
হরিণঘাটা, কল্যাণী

কেন হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ব? যারা স্কুল শেষ করার পরেই পেশাগত প্রশিক্ষণ নিয়ে রোজগার শুরু করতে আগ্রহী, তাদের জন্য ভাল কেরিয়ার হোটেল ম্যানেজমেন্ট বা হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট। মাধ্যমিকের পর তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স, ‘ব্যাচেলর ইন হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট’। মাস্টার্সও করা যায়। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে যে কোনও শাখায় ৫০ শতাংশের বেশি পেলেই ভর্তি হওয়া যায় অনেক প্রতিষ্ঠানে।

কোথায় কাজের সুযোগ মেলে?

হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট উত্তীর্ণদের ভালই চাহিদা আছে এয়ারলাইন্স, হোটেল, ব্যাঙ্ক, বিপিও, হাসপাতাল এবং নানা বহুজাতিক সংস্থায়। হোটেল ম্যানেজমেন্ট শিক্ষকের চাকরিও মিলতে পারে।

চাকরি পেতে সহায়তা মেলে?

অনেক প্রতিষ্ঠানই ছাত্রছাত্রীদের প্লেসমেন্টে সহায়তা করে। আমাদের সংস্থা থেকে সিঙ্গাপুর, কানাডা, মালয়েশিয়া, স্কটল্যান্ড-সহ নানা দেশে প্লেসমেন্টের ব্যবস্থা হয়েছে।

কী কী বিষয় পড়তে হয়?

মূলত চারটি বিষয়। ফুড প্রোডাকশন (খাবার তৈরি)। ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (পরিবেশন)। ফ্রন্ট অফিস (বুকিং, অভ্যর্থনা, বিল)। হাউজ কিপিং (ঘর সাজানো)। স্পোকেন ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ, হোটেল অ্যাকাউন্ট, কম্পিউটার শেখানো হয়। আমাদের লক্ষ্য ঝকঝকে ছেলেমেয়ে তৈরি করা।

কত দিনের কোর্স?

ডিগ্রি কোর্স তিন বছরের। ডিপ্লোমা কোর্সের সময়সীমাও সাধারণত একই। প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্র এবং ছাত্রীদের পৃথক হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পাশাপাশি শরীরচর্চার জন্য জিম, সুইমিং পুল-সহ নানা সুযোগ-সুবিধাও মিলবে।

সুলুক-সন্ধান

পর্বতারোহণে

পর্বতারোহণের নানা কোর্স রয়েছে দার্জিলিঙের ‘হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট’-এ । রয়েছে ২৮ দিনের বেসিক কোর্সও। ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী যে কেউ শিখতে পারেন। ৭ এপ্রিল থেকে ৪ মে, ১৯ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর কোর্স চলে। মেয়েদের জন্য ১০ মে থেকে ৬ জুন। ছেলেদের জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর, ১৮ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর, ২ থেকে ২৯ মার্চ। প্রশিক্ষণ নিতে পারেন বিদেশিরাও। থিওরেটিক্যাল এবং প্র্যাকটিক্যাল রক ক্রাফট ট্রেনিং দেওয়া হয়। ভারতীয়দের জন্য কোর্স ফি ৪২৫০ টাকা। দৃষ্টিহীনদের জন্য বিশেষ অ্যাডভেঞ্চার্স কোর্স রয়েছে।

বিষয় হাসপাতাল

স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট পড়ানো হয় চন্দ্রকোনার ‘ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’তে। উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণেরা স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে পারবেন। সময়সীমা তিন বছর। আসন ৩০। ফি ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। স্নাতকোত্তরে পড়তে পারেন যে কোনও বিষয়ের স্নাতক উত্তীর্ণেরা। ফি ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। আসন ১৮। কোর্সের মেয়াদ দু’বছর। হস্টেলের সুযোগ রয়েছে।

নগরায়ন-পাঠ্যক্রম

শহুরে সমস্যা মোকাবিলায় নয়া এক পাঠ্যক্রম চালু করেছে ইগনু। যাঁরা নগরোন্নয়ন সংক্রান্ত ক্ষেত্রে কাজ করতে চান, তাঁদের জন্য কোর্স— ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা ইন আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’। জানুয়ারি ও জুলাইতে ভর্তি। পাঠ্যক্রম এক থেকে তিন বছরের। ফি ২৮০০ টাকা। যোগাযোগ pgdupdl@ignou.ac.in.

বিএড কলেজে ভর্তি

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বেসরকারি বিএড কলেজগুলিতে প্রাথমিক মেধা তালিকা প্রকাশিত হবে ২২ জুন। চূড়ান্ত তালিকা ২৮ জুন। সরকারি বিএড কলেজে ভর্তি শেষ হলেই বেসরকারিগুলিতে ভর্তির জন্য কাউন্সেলিং শুরু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE