Advertisement
০২ মে ২০২৪
Shibthakur Mondal

ভোট পরবর্তী হিংসায় কি জুড়বে শিবের মামলা, প্রশ্ন

তৃণমূলের বীরভূমের এক শীর্ষ নেতা এ বিষয়ে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কী করতে চাইছে, সেটা তাদের ব্যাপার। আদালতের উপরে আমাদের আস্থা রয়েছে।’’

অনুব্রত মণ্ডল এবং শিবঠাকুর মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।

অনুব্রত মণ্ডল এবং শিবঠাকুর মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৫৭
Share: Save:

শিবঠাকুর মণ্ডলের অভিযোগের ফলে কি অন্য মামলাতেও সমস্যায় পড়তে পারেন অনুব্রত মণ্ডল? বিশেষ করে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায়? এই নিয়েই এখন জোরদার চর্চা বীরভূমে। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রতের বিরুদ্ধে শিবঠাকুরের করা খুনের চেষ্টার অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার যুক্তি, ভোট পরবর্তী হিংসার কোনও অভিযোগে যদিও অনুব্রতের নাম নেই, তবু তাঁর দলের কোনও ঘটনাই তাঁর অজ্ঞাতসারে হওয়া সম্ভব নয়। শিবঠাকুরের অভিযোগে উল্লিখিত সময়কাল এবং ভোট পরবর্তী হিংসার সময়কালও মোটামুটি এক। ফলে এই সন্দেহ জোরদার হওয়া স্বাভাবিক, ইঙ্গিত সিবিআইয়ের।

গত বছর ২ মে বিধানসভা ফল প্রকাশের দিন ইলামবাজারের গোপালনগরের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে উঠে। অভিযুক্তের তালিকায় ২৪ জনের তৃণমূল নেতা-কর্মীর নাম থাকলেও নাম ছিল না বীরভূমে তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতের। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল সিবিআই। যদিও সেই মামলায় আদালতে রক্ষাকবচ পান অনুব্রত। সিবিআইয়ের একটি সূত্রে দাবি, শিবঠাকুরের করা অভিযোগ অনুব্রতের হিংসায় জড়িত থাকার ভূমিকাকে মান্যতা দিতে পারে।

কী ভাবে?

দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিবঠাকুর প্রথমে মৌখিত ভাবে দাবি করেছিলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুবরাজপুরের দলীয় কার্যালয়ে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে গলা টিপে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত। কিন্তু লিখিত অভিযোগের ক্ষেত্রে তিনি লিখেছিলেন প্রথম দফায় লেখেন এ বছর মে মাস। পরে সেই বয়ান বদলে করেছেন গত বছর মে। যদিও পরে ফের তিনি সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, ওই ঘটনা ঘটেছিল বিধানসভা ভোটের আগেই।

এই সূত্রেই সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ২০২১-এর ২ মে যে হেতু বিধানসভা ভোটের ফল বেরিয়েছিল, তাই শিবঠাকুরের করা অভিযোগ অনুব্রতের সেই সময়ে হওয়া হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগকে মান্যতা দিতেই পারে। বিরোধীদেরও অভিযোগ, যিনি নিজের দলের কর্মীকে আক্রমণ করেন, তিনি যে বিরোধীদের আক্রমণে মদত দেবেন, তা বলাই বাহুল্য।

তবে আইনজীবীদের একাংশ মনে করছে, রাজ্য পুলিশের করা এই মামলাকে সিবিআই ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে যুক্ত করতে চাইলে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। এক আইনজীবী জানাচ্ছেন, ইডি অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করতে খুবই তৎপর। এখন ভোট পরবর্তী হিংসায় অনুব্রতকে যুক্ত করতে চাইলে ইডি-র পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। কারণ, সে ক্ষেত্রে মামলার ভরকেন্দ্রই বদলে যাবে। মামলা জেলাকেন্দ্রিক হয়ে যাবে। আর এক আইনজীবীর মতে, তাদের হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুতে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে সিবিআই। তার উপরে ভোট পরবর্তী হিংসায় সরাসরি অনুব্রতের নাম জড়ায়ওনি। তাই এই নিয়ে পদক্ষেপ করতে গেলে বিস্তর ভাবনাচিন্তা করতে হবে সিবিআইকে।

তৃণমূলের বীরভূমের এক শীর্ষ নেতা এ বিষয়ে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কী করতে চাইছে, সেটা তাদের ব্যাপার। আদালতের উপরে আমাদের আস্থা রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shibthakur Mondal Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE