ভেঙে পড়ার পর। নিজস্ব চিত্র।
সাধারণত ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে দূরপাল্লার ট্রেন ও মালগাড়ি যাতায়াত করে। সে জন্য ওই প্ল্যাটফর্মে ঢোকার গেটে যাত্রীদের বিশেষ ভিড় হয় না। তার উপরে রেলের কর্তাদের পরিদর্শনের জন্য শনিবার সরানো হয়েছিল লোকজনকে। সে কারণেই শনিবার সন্ধ্যায় বড় বিপদ এড়ানো গেল বলে মনে করছেন বর্ধমান স্টেশনের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ দিন সন্ধ্যায় ওই গেটের মুখে দফায়-দফায় ভেঙে পড়ে ঝুল-বারান্দা। স্টেশনের এক বই ব্যবসায়ী দীনেশ জৈন দাবি করেন, ‘‘দোকানের ভিতরে ছিলাম। রাত ৮টা ৮ মিনিট নাগাদ হঠাৎ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ার আওয়াজ শুনেই ভয় পেয়ে যাই। দেখি সব ভেঙে পড়েছে। যে মিস্ত্রিরা স্টেশনে কাজ করছিলেন, আমরা গত কালই তাঁদের বলেছিলাম, ওখানে থামগুলো নড়বড় করছে।’’ সেই সময়ে স্টেশনে ছিলেন সমীরণ নন্দী ও শুভঙ্কর রায়। তাঁরা বলেন, ‘‘প্রথমে একটি থাম থেকে ইট-প্লাস্টার খসতে শুরু করে। কেঁপে ওঠে থামটা। তার পরে ছাদ ভেঙে পড়ে। এর পরে ঘড়ির নীচে যে ছাদ ছিল, সেটাও ভেঙে পড়তে শুরু করে।’’
বর্ধমানের রসিকপুরের বাসিন্দা শেখ রাজ জানান, তিনি স্টেশনের সামনে একটি চায়ের দোকানে ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্টেশনের অনুসন্ধান অফিসের সামনের থাম খসছিল, সেটা দেখতে পাচ্ছিলাম। অনেকে সেই সময়ে অনুসন্ধান অফিসে ট্রেনের খবর নিতে গিয়েছিলেন। যখন চাঙড় ভাঙতে শুরু করে তখন লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে দেন। এর মধ্যেই বিকট শব্দে থাম ভেঙে পড়ে। ধুলোয় ঢেকে যায় এলাকা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতি সন্ধ্যায় এই স্টেশনে আসি। এই রকম দৃশ্য দেখতে হবে ভাবিনি। আজ অন্য দিনের থেকে মানুষ কম ছিলেন। না হলে বিপদ বাড়ত।’’ তাঁর দাবি, অন্য দিন ওই সময়ে তিনশো-সাড়ে তিনশো লোক থাকেন ওই চত্বরটিতে। এ দিন সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন জনা কুড়ি। তিনি বলেন, ‘‘জনা দুয়েকের উপর দিয়ে গেল বিপদটা।’’
ঘটনার পরেই স্টেশনে পৌঁছন জেলাশাসক বিজয় ভারতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায়। রেলের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীরাও উদ্ধারকাজে নেমেছেন বলে জানান তাঁরা। ভিড় জমান শহরের অনেক বাসিন্দা। তাঁদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে রাতে থেকে উদ্ধারকাজ দেখতে বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy