Advertisement
E-Paper

চাকরি পেয়েছিলেন রাজনৈতিক প্রভাবশালীর পুত্রও! পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট দেওয়ার তোড়জোড় সিবিআইয়ের

গত বছর এই মামলায় প্রথম চার্জশিট দেয় সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে কী ভাবে টাকা লেনদেন হত, সেই চার্জশিটে তার হদিস দিয়েছিল তারা। পাশাপাশি, কী ভাবে চাকরি পাওয়া যেত, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছিল। আবার এই মামলায় নতুন চার্জশিট দেবে সিবিআই।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১২:২৪
CBI begins preparations to file new chargesheet in municipal recruitment case

পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন চার্জশিট দেবে সিবিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বেশ কয়েক জন রাজনৈতিক নেতানেত্রীর পরিচিতেরা চাকরি পেয়েছেন পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে! শুধু তা-ই নয়, এক রাজনৈতিক প্রভাবশালীর পুত্রও রয়েছেন সেই তালিকায়। সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁকে ডেকেও নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অন্য দিকে, পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আবার চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। মনে করা হচ্ছে, এই প্রভাবশালী তত্ত্ব এবং জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের প্রসঙ্গ থাকতে পারে সিবিআইয়ের চার্জশিটে।

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসায়ী অয়ন শীলকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে তাঁর সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট। সেখান থেকেই পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির হদিস পান তদন্তকারীরা। অয়নের সংস্থা পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআরের দায়িত্বে ছিল। তদন্তে নেমে একে একে আরও অনেককে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।

গত বছর এই মামলায় প্রথম চার্জশিট দেয় সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে কী ভাবে টাকা লেনদেন হত, সেই চার্জশিটে তার হদিস দিয়েছিল তারা। পাশাপাশি, কী ভাবে চাকরি পাওয়া যেত, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছিল। সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছিল, অয়নের দুই এজেন্টের মাধ্যমে বেশ কয়েক জন চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন নিয়েছিলেন অয়নের এজেন্টরা। অয়নের মাধ্যমে কলকাতা-সহ ১৬টি পুরসভায় নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে অনেকে চাকরি পেয়েছেন। চার্জশিটে শমীক চৌধুরী নামে এক এজেন্টের কথা জানায় সিবিআই।

কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি ছিল, অয়নের বন্ধু এবং এজেন্ট ছিলেন শমীক ১০-১২ জনকে বিভিন্ন পুরসভায় চাকরি দিয়েছেন। আর এক জন এজেন্ট ছিলেন দেবেশ চক্রবর্তী ওরফে কানুদা। তাঁর মাধ্যমেও অর্থের বিনিময়ে অন্তত ১৪ চাকরিপ্রার্থী চাকরি পান। বিনিময়ে প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন অয়নের এজেন্টরা। শুধু তা-ই নয়, সিবিআই দাবি করেছিল, পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে ১৮২৯ জন চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁরাও রয়েছেন সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে।

অয়নের মাধ্যমে কারা কারা ‘বেআইনি ভাবে’ চাকরি পেয়েছেন, এ বারের চার্জশিটে তারই উল্লেখ থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সূত্রের খবর, চাকরিপ্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন নেতাদের পরিবার-পরিজন। উল্লেখ্য, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতেও অনেক প্রভাবশালীর নাম প্রকাশ্যে এসেছিল। অনেক নেতামন্ত্রীর জড়িত থাকার প্রমাণ আদালতে জমা করেন তদন্তকারীরা। এ বার পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতেও একই ছায়া।

গত বছরের ২০ মার্চ ইডির হাতে গ্রেফতার হন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন। তার আগে অয়নের চুঁচুড়ার জগুদাস পাড়ার বাড়ি, ফ্ল্যাট এবং অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। অয়নকে জেরার পাশাপাশি তাঁরপরিবারের সদস্যদেরও জেরা করে ইডি। বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। পরে অয়নকে সিবিআই হেফাজতে নেয়।

হেফাজতে থাকাকালীন বার বার জামিনের আবেদন করেন অয়ন। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে তাঁর জামিন মামলা বিচারাধীন। আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে দ্রুত তদন্ত শেষ করার কথা বলেছিল। আদালত মন্তব্য করে, ‘‘ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। হাজার হাজার যুবকের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।’’ সুপ্রিম কোর্ট অয়নের জামিন মঞ্জুর করেনি। তবে তাঁর আইনজীবীকে তিন মাস পর আবার আবেদন করার কথা বলে শীর্ষ আদালত।

Municipality Recruitment Case CBI chargesheet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy