সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে অনুজ পাণ্ডে-সহ নেতাই-কাণ্ডের সাত অভিযুক্তকে জেরা করার জন্য হেফাজতে চাইল সিবিআই। বুধবার ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় এসিজেএম আদালতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি-সহ এই আবেদন করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার বি কে প্রধান। বিচারক টিকেন্দ্রনারায়ণ প্রধান সিবিআইয়ের আইনজীবীকে জানিয়ে দেন, যেহেতু নেতাই মামলাটির বিচার চলছে মেদিনীপুরের বিশেষ দায়রা আদালতে, সুতরাং সিবিআইকে প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি সংশ্লিষ্ট দায়রা আদালতে দাখিল করার পরে নিম্ন আদালতে আবেদন জানাতে হবে। সিবিআইয়ের আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক।
প্রসঙ্গত, নেতাই মামলাটির বিচার চলাকালীন গত বছর মূল অভিযুক্ত অনুজ পাণ্ডে-সহ ৭ পলাতক অভিযুক্ত ধরা পড়েন। অভিযুক্তদের জেরা করার জন্য হেফাজতে চেয়ে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে গত বছর একাধিকবার আবেদন করেছিল সিবিআই। কিন্তু অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী রঘুনাথ ভট্টাচার্য গত বছর সিবিআইয়ের আবেদনের বিরোধিতা করে জানান, ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে সিবিআইয়ের চার্জশিট পেশের পরে দায়রা সোপর্দ হয়ে মেদিনীপুর বিশেষ দায়রা আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ-সহ বিচার চলছে। এই মামলায় নতুন করে আর তদন্তের প্রয়োজন নেই। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরে অনুজদের সিবিআই হেফাজতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল নিম্ন আদালত। এরপর অনুজদের জেরা করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানায় সিবিআই। সেই আবেদনও খারিজ হওয়ায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাটি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। গত ২২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশে জানায়, আইনের বিধান মেনে নিম্ন আদালত মনে করলে অনুজদের সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করতে পারে।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে রথীন দণ্ডপাটের বাড়িতে থাকা সিপিএমের সশস্ত্র শিবির থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। নিহত হন চার মহিলা-সহ ৯ জন গ্রামবাসী। আহত হন ২৮ জন। প্রথমে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। কিন্তু ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডির হাত থেকে নেতাই-মামলার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে দেওয়া হয়। সিবিআই তদন্তে নেমে ওই বছরেই ১২জন সিপিএম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত সিপিএমের বিনপুর জোনাল সম্পাদক অনুজ পাণ্ডে ও তাঁর সম্পর্কিত ভাই ধরমপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক ডালিম পাণ্ডে-সহ ৮ জন নেতা-নেত্রী ফেরার ছিলেন। পলাতক আট জন-সহ ২০ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের মার্চে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। এরপর মামলাটি দায়রা সোপর্দ হয়ে বিচারের জন্য মেদিনীপুরের বিশেষ জেলা ও দায়রা আদালতে ওঠে। বিচার চলাকালীন গত বছর একে একে অনুজ ও ডালিম-সহ পলাতক থাকা ৭ অভিযুক্ত ধরা পড়েন। আরও এক ফেরার অভিযুক্ত সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডল পরে মেদিনীপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এই ৮ নেতা-নেত্রী-সহ কুড়ি জন অভিযুক্তই বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy