Advertisement
E-Paper

‘কালীঘাটের কাকু’কে শনিবার পর্যন্ত হেফাজতে পেল সিবিআই, অন্য হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা!

বিচারকের নির্দেশ, সুজয়কৃষ্ণকে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে সেখানে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। রোজ আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলারও অনুমতি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৯
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।

সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। — ফাইল চিত্র।

আদালতের নির্দেশে ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে হেফাজতে পেল সিবিআই। শনিবার পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে থাকবেন। মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশের পরেই নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণকে হেফাজতে নিতে জেলে গিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। এর আগে আদালত বার বার সুজয়কৃষ্ণকে সশরীরে হাজির করানোর কথা বলেছে। যদিও অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাজির করানো যায়নি। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তিনি অসুস্থ। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য হাসপাতালে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হতে পারে।

মঙ্গলবার বিচার ভবনে বিশেষ সিবিআই আদালতে সুজয়কৃষ্ণের মামলার শুনানি ছিল। তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয়েছিল শুনানিতে। তাঁর আইনজীবী জামিনের জন্য আবেদন করেন। যদিও সিবিআই সেই আবেদনের বিরোধিতা করে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চায়। সেই আবেদন মেনে আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুজয়কৃষ্ণকে সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে বিচার ভবন। বিচারকের নির্দেশ, সুজয়কৃষ্ণকে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে সেখানে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হবে। প্রতি দিন অন্তত এক ঘণ্টার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তিনি। তবে সিবিআই যখন জেরা করবে, তখন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না তিনি।

এর আগে আদালত জানিয়েছিল, সশরীতে হাজির করানো না-গেলে সুজয়কৃষ্ণকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না। মঙ্গলবারও তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে হাজির করানো হয়েছে। এর পরে তাঁকে সিবিআই হেফাজতে চাইলে তাঁর আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, সশরীরে হাজির না-করানো গেলে কী ভাবে তাঁর মক্কেলের সিবিআই হেফাজত সম্ভব? সিবিআই পাল্টা সওয়াল করে তাঁকে চার দিনের জন্য হেফাজতে নিতে চায়। বিচারক বলেন, ‘‘ওঁকে তো সশরীরে হাজির করানো হয়নি। কী ভাবে হেফাজত সম্ভব?’’

সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী সেলিম রহমানের সওয়াল, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির মামলায় তাঁর মক্কেলের জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর সিবিআই এত দিন কিছু করেনি বলেও আদালতে দাবি করেন আইনজীবী। সিবিআই পাল্টা জানায়, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে ‘কাকু’র যোগ পাওয়া গিয়েছে। এই মামলায় অন্য অভিযুক্ত সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষদের মতো সুজয়কৃষ্ণও অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলেছিলেন। অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা পাঠিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক বলেন, ‘‘প্রথম দিন থেকেই অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজত চাইছে সিবিআই। কিন্তু উনি সশরীরে হাজিরা না-দিতে পারলে সিবিআই কী করবে! গত কয়েক দিনে যা যা হয়েছে, তার জন্য তো সিবিআই দায়ী নয়। আদালত সব দেখছে।’’

সুজয়কৃষ্ণের মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর আইনজীবী দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের জামিন মামলার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচার ভবনের বিচারক জানিয়েছেন, ওই মামলার নির্দেশ সব ক্ষেত্রে চলে না। সব মামলার নিজস্ব কিছু দিক থাকে। বিচারকের মন্তব্য, ‘‘এ বার আমি দেখছি, কী ভাবে ওঁকে (সুজয়কৃষ্ণ) সশরীরে হাজির করানো যায়। এখন যে হেতু সিবিআই ওঁর পুলিশ হেফাজত চাইছে, আমাকে দেখতে হবে আইন কী বলছে।’’

নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির মামলায় আগেই জামিন পেয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্সি জেলেই রয়েছেন। জেলের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। সোমবারও ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সে দিন তিনি কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়েছিলেন। মঙ্গলবার সুজয়কৃষ্ণকে বসে হাজিরা দিতে দেখা গিয়েছে। ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁকে সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।

Sujay Krishna Bhadra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy