কল্যাণ মজুমদার। নিজস্ব চিত্র
ময়দানে সারদার টাকার হদিস করতে এ বার ক্লাবকর্তাদের ডেকে পাঠাতে শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সোমবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সচিব কল্যাণ মজুমদার-সহ তিন কর্মকর্তা সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র দফতরে হাজির হন। ইডি সূত্রের খবর, সারদার টাকা কী ভাবে খরচ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তারা এ ব্যাপারে কিছু নথি জমা দিয়েছেন। মোহনবাগান ক্লাবের কাছেও এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ দিন তাদের কোনও কর্তা ইডি দফতরে না গেলেও এক প্রতিনিধি মারফত হিসেবের নথিপত্র পাঠানো হয়েছে।
সারদা তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ময়দানের বিভিন্ন ক্লাবে সুদীপ্ত সেন টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সারদা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গ্রেফতার হওয়ার আগে নিতু ইডি-র জেরারও মুখোমুখি হন। ইডি সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে ময়দানের ক্লাবগুলিতে সারদার যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগের তথ্য মিলেছিল, তার থেকেও বেশি টাকা সুদীপ্ত দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। তার ভিত্তিতেই ফের ক্লাবকর্তাদের ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সূত্রের খবর, ইডি কর্তারা ক্লাবের সচিব কল্যাণবাবুকে রীতিমতো সমন পাঠিয়ে হাজির হতে বলেছিলেন। ইডি সূত্রের খবর, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে সারদার চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তদন্তকারীদের।
এ দিন বেলা এগারোটা নাগাদ কল্যাণবাবু এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ দেবদাস সমাজদার ও হিসেবরক্ষক তপন দাস ইডি দফতরে হাজির হন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বেলা দেড়টা নাগাদ বেরিয়ে আসেন তাঁরা। সে সময় দৃশ্যতই বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। ইডি সূত্রের খবর, সারদা থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। সেই টাকা খরচ নিয়েই জানতে চাওয়া হয়েছে। এ দিন ক্লাবের হিসেব জমা দিয়েছেন কর্তারা। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর কিংফিশার ইস্টবেঙ্গলের (স্পনসরের সঙ্গে যৌথ ভাবে তৈরি হওয়া সংস্থা। এরাই খেলোয়াড়দের টাকা দেয়) হিসেব চাওয়া হয়েছে।
ক্লাব সূত্রের খবর, এ দিন জেরায় ইডির তদন্তকারীরা ওই ৫ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার কথাই হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। যাতে বিস্মিত লাল-হলুদ শিবির। ক্লাবের অনেকেই বলছেন, ওই ৫ কোটি টাকা ফুটবলারদের পিছনে খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন তা ফেরত দিতে বললে বড় সমস্যা হবে।
ইডি সূত্রের খবর, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ছাড়াও ময়দানের আরও কয়েকটি ক্লাবে টাকা দিয়েছিল সারদা। সেই ক্লাবকর্তাদেরও ডাকা হয়েছে। সারদার টাকা ওই ক্লাবগুলি কী ভাবে খরচ করেছে, তা জানতে চাওয়া হবে। ওই ক্লাবকর্তাদের অনেকেই শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে ইডি সূত্রের খবর।
এ দিন মধ্যমগ্রামে সারদার একটি বহুতল বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। মধ্যমগ্রাম চৌমাথার কাছে যশোহর রোডে প্রায় ৯ কাঠা জমিতে চার তলা বাড়িটিতে সারদার কোনও অফিস ছিল না। দুপুরে ইডি-র তিন অফিসার এসে ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নোটিস ঝুলিয়ে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy