Advertisement
E-Paper

সন্দীপের বয়ান দেখাতে পারল না তদন্ত-সংস্থা

এ বার সন্দীপ-অভিজিৎকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত ও জেলে গিয়ে জেরা করার আর্জি জানায় সিবিআই। বিচারক দু’জনের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। জেলে গিয়ে জেরার আর্জিও মঞ্জুর হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩১

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন, ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের নথিভুক্ত বয়ান দেখতে চেয়েছিলেন শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অরিজিৎ মণ্ডল। কিন্তু সিবিআইয়ের আইজীবীরা তা দেখাতে পারেননি। এ দিন সিবিআই আদালতে যে আবেদন জানায়, তাতেও ছিল একাধিক ত্রুটি।

তদন্তের স্বার্থে জেল হেফাজতে থাকা দু’জনকে জেরা করার জন্য তিন দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা। কিন্তু জেলে গিয়ে কেন তাঁদের জেরা করা যাবে না, বিচারক এই প্রশ্ন তোলায় ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা। এর পরে তাঁরা হাতে লিখে যে আর্জি জানান, তাতেও প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যের উল্লেখ ছিল না। সিবিআইয়ের আইনজীবীদের মৃদু ভর্ৎসনা করে বিচারক বলেন, আবেদন করার সময়ে এই রকম ভুল যেন আর না হয়। এই মামলায় ধৃত সন্দীপ ও অভিজিতের সোমবার প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ভার্চুয়াল শুনানি হয়।

এ দিন সিবিআইয়ের আইনজীবী দীপক পোরিয়ার-সহ অন্যরা বলেন, “সম্প্রতি টালা থানার সিসিটিভি ফুটেজ, হার্ড ডিস্ক এবং দু’জনের তিনটি মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। তার রিপোর্ট হাতে এসেছে। কিছু নতুন তথ্য মিলেছে। তার ভিত্তিতেই দু’জনকে জেরা করা হবে।” পাল্টা অভিজিতের আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য জামিনের আর্জি জানিয়ে বলেন, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন অভিজিৎকে জেরা করা হয়নি। সন্দীপের জামিনের আর্জি জানিয়ে তাঁর আইনজীবী জোহেব রব বলেন, “টালা থানার সিসিটিভি ফুটেজের ফরেন্সিক রিপোর্ট এসেছে। সন্দীপ কোনও দিন টালা থানায় যাননি। সন্দীপকে জেরা করে কী বয়ান রেকর্ড হয়েছে, সেটাও দেখা হোক।”

এর পরেই সন্দীপ ও অভিজিতের নথিভুক্ত বয়ান দেখতে চান বিচারক অরিজিৎ মণ্ডল। কিন্তু কেস ডায়েরি খুঁজেও সেই বয়ান দেখাতে পারেননি সিবিআইয়ের আইনজীবী। এর পরেই বিচারক জানতে চান, জেলে গিয়ে কি দু’জনকে জেরা করা হয়েছে? জেলে গিয়েই তো জেরা করা যেতে পারে। তা হলে তাঁদের কেন নিজেদের হেফাজতে চাইছে সিবিআই? জেরা না করলে সিবিআই বুঝছে কী করে অভিযুক্তেরা সহযোগিতা করছেন না! বিচারক বলেন, “পুলিশি হেফাজত চাওয়ার অধিকার আপনাদের রয়েছে। কিন্তু জেলে গিয়ে জেরা করতে কী সমস্যা?”

সিবিআইয়ের আইনজীবী যুক্তি দেন, জেলে ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে জেরা করার জন্য অনেক ব্যবস্থা করতে হয়। বিচারক তা মানেননি। এর পরেই সিবিআই হেফাজতের আর্জি প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। বিচারক জানান, তাঁরা যেন সময় নিয়ে আবেদন করেন। সিবিআইয়ের আইনজীবীরা হাতে লিখে ধৃতদের জেলে গিয়ে জেরা করার আর্জি জানান। তখন অভিজিতের আইনজীবী অয়ন বলেন, “এর আগে অভিজিতকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানিয়েও প্রত্যাহার করা হয়েছে। নতুন আবেদনে অভিজিতকে জেল হেফাজতে চাওয়ার কথা উল্লেখ করা নেই। সে ক্ষেত্রে আমার মক্কেল জামিন পেতেই পারেন।” সিবিআইয়ের আইনজীবী যুক্তি দেন, “জেলে গিয়ে ধৃতদের জেরা করার আর্জি জানানোর অর্থ তাঁদের জেল হেফাজতের আবেদন জানানো।” অয়ন প্রশ্ন তোলেন, “সিবিআইকে আর কত বার সুযোগ দেওয়া হবে?”

এ বার সন্দীপ-অভিজিৎকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত ও জেলে গিয়ে জেরা করার আর্জি জানায় সিবিআই। বিচারক দু’জনের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। জেলে গিয়ে জেরার আর্জিও মঞ্জুর হয়েছে।

এ দিন ভার্চুয়াল শুনানি হওয়ায় নারকো পরীক্ষার জন্য সন্দীপের ও পলিগ্রাফ পরীক্ষার জন্য অভিজিতের সম্মতি সংক্রান্ত শুনানি হয়নি। কোর্টে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, অন্য যে দিন তাঁদের আদালতে হাজির করা হবে, সে দিন এই পরীক্ষার জন্য তাঁদের সম্মতির বিষয়টি জানার আর্জি জানানো হবে। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারের জুনিয়র আইনজীবী অর্জুন গুপ্তু এ দিন এই মামলা সংক্রান্ত কোনও নথি আদালতে জমা পড়লে তার কপি দেওয়ার জন্য শিয়ালদহ আদালতে আর্জি জানান।

R G Kar Hospital CBI Sandip Ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy