লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিক জায়গায় পাঠানোই হয়নি বলে ফুল বেঞ্চের কাছে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের হাতেই রাখার দাবি জানাল বিরোধীরা। আবার কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে শাসক তৃণমূলের প্রশ্ন, লোকসভা ভোটের গণনা কবে কখন হবে, তা নিয়ে কী ভাবে আগাম মন্তব্য করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতা?
ভোটের আগে রাজ্যে এসে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বাধীন কমিশনের ফুল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার মধ্য কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে আলাদা আলাদা ভাবে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছে। সব বিরোধী দলই কমিশনের কাছে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন এবং ভোটের সময়কার হিংসার অভিযোগের খতিয়ান দিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ লোকসভা নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। লোকসভার ভোট হয় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরায়। কিন্তু এ রাজ্যে বিগত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিক জায়গায় পাঠানোই হয়নি বলে ফুল বেঞ্চের কাছে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। সেই জন্যই বাহিনী মোতায়েনের ভার কমিশনের হাতে রাখার দাবি তুলেছে তারা।
বিরোধীদের আগেই এ দিন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের তরফে সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও তাপস রায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোট-গণনা কবে কখন হবে, তা নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের আগাম মন্তব্যের বিষয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। কয়েক দিন আগেই কাঁথিতে সভা করতে এসে শাহ বলেছিলেন, মে মাসে লোকসভার ভোট-গণনা সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে, বেলা ১টার মধ্যে ফল স্পষ্ট হবে এবং দুপুর ২টোতেই রাজ্য সরকারের পতন হবে। বৈঠকের পরে অবশ্য তৃণমূল নেতারা এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠক সেরে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘ভোটের প্রত্যেক স্তরেই বাইরে থেকে পর্যবেক্ষক আনতে হবে। এখনই পুলিশ পর্যবেক্ষককে নিয়োগ করে রাজ্য পাঠাতে হবে।’’ সব বুথেই ভিতরে-বাইরে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবিও করেছেন তাঁরা। প্রদেশ কংগ্রেসের দুই সহ-সভাপতি দেবব্রত বসু ও মায়া ঘোষ দাবি করেন, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের মতো নজরদারি চালাক কমিশন। রাজ্যে ২০১৪-র লোকসভা ও ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে নজরদারি ‘শিথিল’ ছিল বলে তাঁদের অভিযোগ। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘বুথের ২০০ গজের মধ্যে ভোটার এবং নির্বাচনকর্মী ছাড়া যেন কেউ না থাকেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে কমিশনকে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেবের বক্তব্য, ‘‘আমরা জানতে চেয়েছি, কোন ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে রাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের গ্যারান্টি দেবে কমিশন?’’ বিধানসভা ভোটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করার ছবিও কমিশনকে দিয়েছেন তাঁরা।
পঞ্চায়েত হিংসা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি গোপালগৌড়ার নেতৃত্বাধীন তথ্যানুসন্ধান কমিটি যে রিপোর্ট তৈরি করেছিল, তা কমিশনকে জমা দেন প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরামে’র প্রতিনিধিরা।
আলোচনা শেষে বাম শিবিরের দাবি, বাংলার লোকসভা নির্বাচনকে ‘বিশেষ’ ভাবে দেখা হচ্ছে বলে কমিশন জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy