প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে একশো দিনের কাজ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় নিরীক্ষণ দল পাঠাচ্ছে দিল্লি। অভিযোগ, কম কাজ করা নয়, করোনা-লকডাউনের আবহেও রাজ্যে ১০০ দিনের প্রকল্পে যে পরিমাণ কাজ হয়েছে তা ‘অকল্পনীয়’ মনে হয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের। যখন দেশের সর্বত্র এই প্রকল্পে কাজ সে-ভাবে হচ্ছে না, সেখানে চার মাসে পশ্চিমবঙ্গ ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। যা পুরো বছরের বরাদ্দের প্রায় ৭৫ ভাগ। রাজ্যের ৯১ লক্ষ সক্রিয় জবকার্ডধারীর মধ্যে চার মাসেই পঞ্চায়েত দফতর কাজ দিয়েছে প্রায় ৭৬ লক্ষ মানুষকে।
জেলাশাসকদের একাংশ জানিয়েছেন, করোনা পরীক্ষা আর স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বৃদ্ধি নিয়েই এ ক’মাস ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। ফলে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ১০০ দিনের কাজ তদারকি সব সময় করা যায়নি। উত্তরবঙ্গের এক জেলাশাসকের কথায়, ‘‘মাস্টার রোল, উপভোক্তা এবং যাঁদের জবকার্ডে কাজ হয়েছে সে সব মেলাতে পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে।’’ দক্ষিণবঙ্গের এক জেলাশাসকের কথায়, ‘‘টানা লকডাউনে মানুষের হাতে কাজ ছিল না। তাই অনেকে এসে কাজ চেয়েছেন। সেই কারণেই কাজ বেশি হয়েছে।’’
পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি চুরি-জোচ্চুরি হয়ে থাকে দিল্লির দল এসে ধরুক। তা না হলে বলে যেতে হবে, ১০০ দিনের কাজে পশ্চিমবঙ্গই সেরা। ১০০ দিনের কাজের আইন অনুযায়ী মানুষ কাজ চাইলে দিতে হবে, না দিতে পারলে বেকার ভাতা দিতে হবে। আমরা সবাইকে সময়ে কাজ দিয়েছি বলে এখনও কাউকে বেকার ভাতা দিতে হয়নি।’’
যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘যে রাজ্য সময়ে কাজ না-করার ব্যাপারে রেকর্ড করে, সেখানে চার মাসে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে গেল? ছুটির দিন, লকডাউনের দিন বাদ দিলে দেখা যাচ্ছে, গড়ে প্রতি দিন এক লক্ষ মানুষ কাজ পেয়েছে। আমি তো এই সময়েও বহু জেলায় গিয়েছি, কোথাও দেখিনি কেউ কাজ করছেন।’’
তবে পঞ্চায়েত দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এ বছরের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যেও পুরনো সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে ১০০ দিনের কাজ। ২০২০-২১ এর এপ্রিল-জুলাই পর্যন্ত ৭ কোটি ৬০ লক্ষ কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু চার মাস পর দেখা যাচ্ছে, ১৬ কোটি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। ২০১৯-২০ সালে প্রথম চার মাসে ৮ কোটি ৩১ লক্ষ কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বাস্তবে হয়েছিল, ৫ কোটি ৩৮ লক্ষ। গত বছর পরিবার-পিছু ৫০ দিন কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এ বার প্রথম চার মাসেই পরিবার পিছু ২৯ দিন কাজ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। করোনা-লকডাউনের মধ্যেও কী ভাবে এমন অসম্ভব সম্ভব হল? পঞ্চায়েত সচিব এম ভি রাও ও নারেগা কমিশনার কৌশিক সাহা কোনও ব্যাখ্যা দিতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy