Advertisement
E-Paper

টাকা ফিরে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের

এমনকী ওই টাকা যে কোনও প্রকল্পে খরচ করা যাচ্ছে না, বিশ্ববিদ্যালয় সেটাও জানায়নি কেন্দ্রকে। তাই এ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়কে কড়া চিঠি পাঠিয়ে বছরে দশ শতাংশ হারে সুদ-সহ পুরো টাকা ফেরত চেয়েছে কেন্দ্র।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ০৩:২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক উপাচার্য এসেছেন। কিন্তু কেন্দ্রের থেকে পাঠানো অর্থের খবর কেউই রাখেননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়কেই এ বার বিড়ম্বনায় পড়তে হল। ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের পাঠানো টাকা ব্যবহার করা হয়নি। তার জেরেই এই বিপত্তি।

তিন বছর আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ওই বরাদ্দ অর্থ কোনও প্রকল্পে ব্যয় করা হয়নি। এমনকী ওই টাকা যে কোনও প্রকল্পে খরচ করা যাচ্ছে না, বিশ্ববিদ্যালয় সেটাও জানায়নি কেন্দ্রকে। তাই এ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়কে কড়া চিঠি পাঠিয়ে বছরে দশ শতাংশ হারে সুদ-সহ পুরো টাকা ফেরত চেয়েছে কেন্দ্র।

শিক্ষা সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে কেন্দ্রের যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই টাকায় রবীন্দ্র সরোবরের ভিতরে অত্যাধুনিক ইন্ডোর স্টেডিয়াম গড়ার পরিকল্পনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস কমিটি। এই প্রকল্পের বিষয়টি মন্ত্রককে জানিয়েও দেয় তারা। কিন্তু ২০১৫ সালে কলকাতা ইভপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি) জানিয়ে দেয়, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সরোবরের ভিতরে নির্মাণকাজ করা যাবে না। তখনই থমকে যায় প্রকল্পের কাজ। এর পরে প্রায় দু’বছর কেটে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ বা স্পোর্টস কমিটি মন্ত্রককে এই বিষয়টি জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, গত এপ্রিলে মন্ত্রকের তরফে উপাচার্য আশুতোষ ঘোষকে ফোন করে ওই প্রকল্পের তথ্য চাওয়া হয়। উপাচার্যের তাঁর কাছে কোনও তথ্য না থাকায় কিছুই জানাতে পারেননি। উপাচার্য সোমবার বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানতাম না। ওই ফোন পাওয়ার পরে স্পোর্টস কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি জানতে পারি। জানিয়ে দিয়েছি, টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’’

কিন্তু চলতি মাসেই মন্ত্রকের তরফ থেকে কড়া চিঠি পৌঁছয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে জানানো হয়, দশ শতাংশ সুদ-সহ পুরো টাকা ফেরত দিতে হবে।

এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অস্থায়ী’ রোগকে দায়ী করছেন অনেকেই। কারণ যখন মন্ত্রক টাকা পাঠায়, তখন উপাচার্য ছিলেন সুরঞ্জন দাস। সেই সময়েই কোনও খোঁজ খবর না-নিয়েই রবীন্দ্র সরোবরে স্টেডিয়ামের প্রকল্প করা হয় বলে খবর। এর পরে কেআইটি-র তরফে যখন চিঠি পাঠানো হয়, তখন উপাচার্য হিসেবে সবে মাত্র দায়িত্ব নিয়েছেন সুগত মারজিত। বর্তমানে উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। আগামী ১৫ জুলাই আশুতোষবাবুরও মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইনি জটিলতার ফলে সার্চ কমিটিও ভেঙে গিয়েছে। ফলে ফের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে কাউকে নিয়োগ করা হবে। অর্থ পাওয়া এবং তা নিয়ে সমস্যার সমাধান না-হওয়ার মধ্যেই চার বার উপাচার্য বদল হতে চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। রেজিস্ট্রার-পদে বদল হয়েছে দু’বার। গোটা অব্যবস্থার পিছনে এই ঘটনাকেই দায়ী করছেন অনেকে। এই ধরনের জটিল পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল শীলের মন্তব্য, ‘‘যে-ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ পুড়ল, তাতে ওই স্পোর্টস কমিটির গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে বলে মনে হয় না।’’

University of Calcutta Central Government Money Interest কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy