Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Budget 2024-25

রাজ্য বাজেটে আরও বাড়ল ধারের সীমা, দাবি অতিরিক্ত খরচ ধাপে ধাপে কমিয়ে আর্থিক শৃঙ্খলার ছাপ রাখার

সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট বাজেটের নিরিখে অতিরিক্ত খরচের বহর ২০২০-২১ সালে ১২.২% থেকে কমিয়ে চলতি আর্থিক বছরে আনা হয়েছে ৪.৫%-এ।

Chandrima Bhattacharya

চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:৫৫
Share: Save:

আয়ের দিশা না রেখেই লাগামছাড়া খরচের প্রতিফলন নতুন বছরের (২০২৪-২৫) বাজেটে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। শনিবার বিধানসভায় রাজ্য সরকার পাল্টা দাবি করেছে, অতিরিক্ত খরচ ধাপে ধাপে কমিয়ে মজবুত আর্থিক শৃঙ্খলার ছাপ রাখা হয়েছে বাজেটে। এ দিন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের অভিযোগ, কেন্দ্র তাদের বরাদ্দ ঠিক মতো পাঠালে অতিরিক্ত এত খরচও করতে হত না রাজ্যকে। একই সঙ্গে, এ দিন ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের জন্য ‘ফিসকাল রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট’-এর (এফআরবিএম—ধারের সীমা সংক্রান্ত আইন) সংশোধনী পেশ করেছে রাজ্য। তাতে রাজ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) নিরিখে ধারের সীমা কিছুটা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।

সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট বাজেটের নিরিখে অতিরিক্ত খরচের বহর ২০২০-২১ সালে ১২.২% থেকে কমিয়ে চলতি আর্থিক বছরে আনা হয়েছে ৪.৫%-এ। বিদ্যুৎ-ক্ষেত্রে সংস্কারের কেন্দ্রীয় নীতি মেনে নেওয়ায়, ধার করার সীমা ০.৫% বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে। ফলে এখন জিএসডিপি-র নিরিখে ৩.৫% ঋণ নেওয়া যাবে।

নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর বাজেটের অতিরিক্ত কোনও খরচ করলে সরকারকে তা বিধানসভায় পাশ করাতে হয়। ২০২৩-২৪ (চলতি) আর্থিক বছরে বাজেট বরাদ্দের অতিরিক্ত প্রায় ১৫,২৬২ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য। মোট বাজেটের নিরিখে যা ৪.৫%। চন্দ্রিমা বিধানসভায় বলেন, “সামাজিক প্রকল্প আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই খরচ করা হয়েছে। কেন্দ্রও তার বরাদ্দ করা টাকা রাজ্যকে দেয়নি। তাই বেশি খরচ করতে হয়েছে।” রাজ্যের অর্থ দফতরের কর্তাদের দাবি, দায়িত্বশীল এবং আর্থিক শৃঙ্খলা মেনে চলা হয়েছে বলেই অতিরিক্ত খরচ কমানো গিয়েছে।

এ দিন যে হিসাব সরকার পেশ করেছে, তার মধ্যে পথশ্রীতে প্রায় ৩০০০, লক্ষ্মীর ভান্ডারে ১২০০, জয়বাংলা পেনশন প্রকল্পে ৯৭৬, দুয়ারে রেশনে ৫০০, স্বাস্থ্যে ৫৩১ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করা হয়েছে। তা ছাড়া সেড়ক, সেতু, আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় বাড়তি খরচ করতে হয়েছে সরকারকে। তবে বিরোধীদের অনেকের বক্তব্য, যে ভাবে নতুন বাজেটে খরচের প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তাতে ধারের পরিমাণের সঙ্গে অনেকটা বাড়বে রাজস্ব এবং রাজকোষ ঘাটতি।

২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য এফআরবিএম-এর সংশোধনীও পাশ করেছে বিধানসভায়। রাজ্য জানিয়েছে, অর্থ মন্ত্রকের নীতি অনুযায়ী রাজ্য বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সংস্কার মেনে নিলে অতিরিক্ত ০.৫% ঋণ নিতে পারবে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কারের পদক্ষেপের সেই তথ্য বিদ্যুৎ মন্ত্রকেও পাঠিয়েছে রাজ্য। ফলে এ বার বাজার থেকে ধার নেওয়া যাবে জিএসডিপি-র ৩.৫%। ২০২১-২২ থেকে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের জন্য এই সুবিধা কার্যকর রয়েছে। তার ফলে ধার ছাড়াও ২০২৩-২৪ (চলতি) অর্থবর্ষের জন্য রাজকোষ ঘাটতি ৩.৫%-এর মধ্যে রাখা যাবে। প্রসঙ্গত রাজ্যের জিএসডিপি এখন পোঁছেছে ১৭ লক্ষ কোটি টাকায়। চন্দ্রিমা বলেন, “জিএসডিপি রাজ্য নয়, কেন্দ্র স্থির করে দেয়। ২০১০ সালের এফআরবিএম আইনে জিএসডিপি-র ৩% ধার করা যেত। অর্থ কমিশনের সুপারিশক্রমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ লাঘব করার জন্য ০.৫% অতিরিক্ত ঋণ অনুমোদিত হয়েছে। আর্থিক শৃঙ্খলা না থাকলে এটা হত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE